যমুনার ভাঙনে বিলীন ২৫ বসতভিটা

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুর থানাধীন চাঁদপুর এলাকায় যমুনা নদীর তীব্র স্রোত ও ঘূর্ণাবর্তে প্রায় ২৫টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আকস্মিক এই ভাঙনে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে বসতভিটা ছাড়াও মসজিদ, মাদ্রাসা, সদিয়া দেওয়ানতলা সংকরহাটি উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রায় পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও বিলীন হয়ে যেতে পারে।
রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা ঘরের খুঁটি, টিনের চাল এবং অন্যান্য জিনিসপত্র সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। বয়োবৃদ্ধ থেকে শুরু করে নারী-শিশুদেরও নদীর পাড়ে ভিড় করতে দেখা যায়। গত শুক্রবার দুপুরের পর থেকে যমুনার প্রবল স্রোতে লালচাঁন, জুড়ান, সাইফুল, রবি, ইয়াদুল ও ডা. এরশাদের বাড়িসহ প্রায় ২৫টি বাড়ি কয়েক মিনিটের মধ্যে নদীতে চলে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত আতাহার মণ্ডল জানান, ৭৩ বছর বয়সে তিনি প্রায় ২৫ বার নদীভাঙনের শিকার হয়েছেন। কিন্তু এভাবে হঠাৎ করে এমন আগ্রাসী থাবা এর আগে দেখেননি। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে চাঁদপুর এলাকায় শত শত ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে, কিন্তু অবশিষ্ট এলাকা রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেনি।
সদিয়া দেওয়ানতলা সংকরহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন, ভাঙন এলাকা থেকে মাত্র ৫৫ মিটার দূরেই তাদের স্কুল কমপ্লেক্স ভবন। তিনি বলেন, অবিলম্বে স্থায়ীভাবে তীর সংরক্ষণে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা প্রয়োজন।
সমাজসেবক হাফিজুর রহমান, শিক্ষক ইকবাল হোসেন, আব্দুল মমিন ও শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম জানান, চোখের সামনে কয়েকশ মিটার এলাকা বিলীন হতে দেখে তারা হতবাক। প্রায় ৩০টি বসতভিটা নদীতে বিলীন হওয়ায় তারা সবাই আতঙ্কিত। তারা ক্ষতিগ্রস্ত সকল অসহায় পরিবারকে বিশেষ সহায়তা দেওয়ার দাবি জানান।
এদিকে, ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে এসে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ পারভেজ জানান, প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা ও বেশ কিছু বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। তিনি বলেন, দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিংসহ ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।