বাংলাদেশ দখলের হুমকি দিচ্ছে ভারতীয় নেতারা : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ৫ আগস্টের পরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে যে ধরনের হুমকি হুংকার ক্রমাগতভাবে আসছে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে এবং যে সকল শক্তির উত্থান ঘটছে, তাতে করে আমাদের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব অটুট রাখার জন্য বড় ধরনের একটি ষড়যন্ত্র পাকিয়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘৭ নভেম্বর প্রজন্ম’ আয়োজিত ড. মারুফ মল্লিকের লেখা ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ: নাগরিক ও জাতীয়তাবাদী জাতীয়তাবাদের সংকট’ শীর্ষক বইয়ের ওপর আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আজকের এই বাস্তব প্রেক্ষাপটে যখন আমরা প্রতিনিয়ত হুমকির সম্মুখীন হচ্ছি, বিশেষ করে ৫ আগস্টের পরে, তখন ভিন্ন জনের এত সুর শোনা যাচ্ছে—যে অমুক খারাপ, আমরা ভালো। আপনি যে ভালো, সেটি খোঁজ করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে যে বালু মহলের সঙ্গে বিএনপির লোক যদি জড়িত থাকে, সেখানে জামায়াতের লোকও জড়িত আছে—সেটিওতো গণমাধ্যমে এসেছে। গণমাধ্যমে সেগুলো যে একেবারে আসছে তা না, কিন্তু সেটি বেশি ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে না।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, সিলেটের পাথর যারা চুরি করেছে সেখানেও জামায়াত নেতার নাম পাওয়া গেছে, নারী ঘটিত বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গেও তাদের নাম পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে বিএনপি করছে, বিএনপি করছে। বিএনপির কোনো নেতাকর্মী অন্যায় করলে তাদের বিরুদ্ধে যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটাওতো ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে না। একটা পরিবারের মাঝে দুষ্ট ছেলে থাকতে পারে—সেই দুষ্ট ছেলেকে বাবা-মা শাসন করছে কিনা, সেটা তো বিবেচনা করতে হবে।
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, খুব পরিকল্পিতভাবে সরকারের একজন উপদেষ্টা শুরু করলেন, সেই কোরাস এখন গাইছে একটি রাজনৈতিক দল। সেই দলের নেতারা গতকালও চাঁদাবাজি, রাহাজানি নিয়ে কথা বলেছেন—সেখানে তো আপনাদের নামও পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের দলের যারা এগুলোর সঙ্গে জড়িত, আমরা তাদের বহিষ্কার করছি, পদ স্থগিত করছি, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি—সেটা তো বলছেন না। খুব কায়দা করে নানাভাবে একটা বয়ান তৈরি করে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
ডাকসুর ভিপি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, একজন ভিপিকে কি ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়ার দেওয়া হয়েছে? তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কোনটি অবৈধ দোকান তা ফাইন করছেন, আবার সেই ফাইনের টাকা পার্টির বায়তুল মালে জমা দিচ্ছেন—এটার কি কোনো আইনগত ভিত্তি আছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস হবে জ্ঞানচর্চার বিশাল ক্ষেত্র, সেই জ্ঞানচর্চার দায়িত্ব পালন করবে ডাকসুর ভিপি। সেই জ্ঞানচর্চায় শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণ থাকবে। এটা কতটুকু নিশ্চিত করা হয়েছে, সেটা না দেখে আপনি দোকান বৈধ নাকি অবৈধ সেটির ফাইন করছেন— এটা তো আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় কোন আলোচনা দেখছি না।
রিজভী আরও বলেন, আমিওতো রাকসুর ভিপি ছিলাম—বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কে দোকানদারি করছে, কে মার্কেট করছে সেটা দেখার জন্য তো বিশ্ববিদ্যালয়ের অথরিটি আছে, প্রশাসন আছে, তারা দেখবে। সেখানে ছাত্রনেতা গিয়ে বলতে পারে ক্যাম্পাসে যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে। কিন্তু সেটা না করে আপনি গিয়ে ফাইন করে দিচ্ছেন, সেই ফাইনের টাকা যাচ্ছে জামায়াতের বাইতুল মালে—এটা কোন ধরনের বিষয়? বরাবরই আমরা দেখছি এদের কর্মকাণ্ড রাষ্ট্রের মধ্যে রাষ্ট্র গড়ে তোলার চেষ্টা।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান,সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া,সিনিয়র সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।