চিকিৎসক ও শয্যা সংকটে ভুগছে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বর্তমানে তীব্র চিকিৎসক সংকট, ওষুধ ও শয্যা সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। এই কারণে উপজেলার প্রায় ৭ লাখ মানুষ যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সম্প্রতি হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত হলেও জনবল এবং অন্যান্য সুবিধা না থাকায় রোগীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যার হলেও এখানে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ জন রোগীর চাপ থাকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৫০ শয্যার জন্য ১১ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে মাত্র ৩ জন (গাইনি, সার্জারি ও অ্যানেস্থেসিয়া) কর্মরত আছেন। এছাড়াও ৮ জন মেডিকেল অফিসারের পদের মধ্যে আছেন মাত্র ৪ জন। উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে ১৭ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৪ জন।
জেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি শুধু উপজেলার মানুষকেই নয়, মহাসড়কের দুর্ঘটনায় আহত রোগীদেরও সেবা দিয়ে থাকে। নতুন ভবন নির্মাণের কারণে অনেকে মনে করছেন হাসপাতালটি ১০০ শয্যার সকল সুবিধা পাচ্ছে। এই প্রত্যাশায় রোগী সমাগম আরও বেড়েছে, কিন্তু বাস্তবে ৫০ শয্যার সুবিধা বলবৎ থাকায় রোগীদের পর্যাপ্ত বেড, খাবার ও ওষুধ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগী হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
রাজাহার ইউনিয়নের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি তার জ্বরে আক্রান্ত ছেলেকে শিশু বিশেষজ্ঞ দেখানোর জন্য এসেছিলেন, কিন্তু সারাদিন অপেক্ষা করার পর জানতে পারলেন এখানে কোনো শিশু বিশেষজ্ঞই নেই।
উপজেলা স্কাউট সদস্য রক্সি বলেন, আগের ৫০ শয্যার হাসাপাতালেই চিকিৎসকসহ অন্যান্য পদ শূন্য ছিল। এখন ১০০ শয্যার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় রোগীদের প্রত্যাশা অনেক বেড়ে গেছে, যার কারণে প্রচুর ভিড় হচ্ছে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাসুদার রহমান বলেন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ শয্যার সক্ষমতা থাকলেও প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ জন রোগীর চাপ থাকে। নতুন ভবন হওয়ায় রোগীদের ধারণা এখানে ১০০ শয্যার সব সুবিধা আছে, যার কারণে আরও বেশি রোগী আসছেন। কিন্তু ৫০ শয্যার সুবিধা বহাল থাকায় অতিরিক্ত বেড, খাবার এবং ওষুধ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।