ভাঙ্গায় অবরোধ
ঢাকাগামী নকশীকাঁথা ও খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন আটকা

ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের দাবিতে আজ রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে মহাসড়কের পাশাপাশি রেলপথ অবরোধ করে অবস্থান নিয়েছে অবরোধকারীরা। এতে ঢাকার সাথে এ অঞ্চলের ট্রেন যোগাযোগ একদম বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা-রাজবাড়ী রেল লাইনের ভাঙ্গা উপজেলার পুকুড়িয়া রেলগেটে গাছের গুঁড়ি ফেলে নকশিকাঁথা ট্রেনটি আটকে রেখেছে বিক্ষুব্ধ জনগণ। সকালে সেখানে ঢাকাগামী নকশীকাঁথা ট্রেনটি এলে ট্রেনটি আটকে বিক্ষোভ করতে থাকে অবরোধকারীরা। এছাড়া খুলনাগামী ঢাকা থেকে আসা ছেড়ে আসা সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভাঙ্গা রেলওয়ে জংশন স্টেশন আটকা পড়ে আছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ট্রেন দুটি সেখানেই আটকা পড়েছিল।
ভাঙ্গা রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার সুমন বাড়ৈ জানান, ঢাকাগামী নকশীকাঁথা ট্রেনটি ভাঙ্গার পুকুড়িয়া ষ্টেশনের কাছে আটকা পড়েছে। এছাড়া রাজবাড়ী হয়ে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভাঙ্গা রেলওয়ে জংশন আটকা পড়ে আছে। অপরদিকে এই মুহূর্তে আরেকটি ট্রেন বেনাপোলগামী রূপসী বাংলা ট্রেনটি ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছে। যে ট্রেনটি হয়তো শিবচর কিংবা পদ্মা স্টেশনে আটকা পড়বে। আমি অবরোধকারীদের সাথে কথা বলেছি। তারা সন্ধ্যার আগে রাস্তা ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের সম্প্রতি গেজেটে নির্বাচন কমিশনের সীমানা পুনর্বিন্যাস নিয়ে ফরিদপুরে দ্বিতীয় দফায় তিন দিনের কর্মসূচি শুরু হয়েছে আজ রোববার সকাল থেকে। পঞ্চম দিনের মতো ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়ন ও হামিরদী ইউনিয়ন দুটি নগরকান্দা উপজেলায় অন্তর্ভুক্ত করায় মহাসড়ক ও রেলপথে গাছ কেটে ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন স্থানীয়রা। মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ থাকায় যাত্রীসহ সাধারণের ভোগান্তি বাড়তে শুরু করেছে।
এদিকে আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে আন্দোলনের অন্যতম নেতা আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক মিয়াকে আটক করা হয়েছে। গতরাতে নগরকান্দার চাঁদহাট এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে পুলিশ তাকে আটক করে বলে নিশ্চিত করেছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব যুগল কিশোর মল্লিক।
মহাসড়কের রাস্তায় গাছ কেটে ও টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধের কারণে ঢাকার সাথে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। রাস্তা অবরোধ করার কারণে, দুটি মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহন আটকা পড়ে আছে। অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি কাজে ব্যবহৃত গাড়িগুলো ছাড়া অন্য কোন কিছুই তারা যেতে দিচ্ছেন না।
এ সময় অবরোধকারীরা জানান, গত ১১৮ বছর যাবত আমরা ভাঙ্গা উপজেলার সাথে সংযুক্ত রয়েছি। ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলে আমরা ভাঙ্গা উপজেলাবাসী এক আত্মার বন্ধনে এক পরিবার। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই সিদ্ধান্ত আমরা মানি না। নির্বাচন কমিশনের এই ভুল সিদ্ধান্ত থেকে যতক্ষণ সরে না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হবে।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ জানান, দুটি মহাসড়কে রাস্তায় গাছ কেটে ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে রেখেছেন স্থানীয়রা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। সম্পতি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে দুটি ইউনিয়ন ভাঙ্গা থেকে নগরকান্দায় যুক্ত হওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে প্রথম দফায় গত ৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার, মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকার সাথে দক্ষিণবঙ্গের পুরোপুরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় অবরোধকারীরা। এতে যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হয়। তারা অতি দ্রুত এর একটি সমাধান চান। গতকাল বিকেলে ভাঙ্গার ১২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা একত্রিত হয়ে এই তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।