ধলেশ্বরী নদীভাঙনে শঙ্কায় দুই শতাধিক পরিবার

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ধলেশ্বরী নদীর ভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই বসতভিটা, কৃষিজমি, রাস্তা ও বাজার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ বেড়ে যাওয়া ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদী তীরবর্তী দুই শতাধিক পরিবার।
আজ শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালের দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, বরাইদ ইউনিয়নের উত্তর ছনকা, পূর্ব ছনকা ও ঘুনা গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। গত কয়েক দিনে অন্তত ১০টি পরিবার গৃহহারা হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। অনিশ্চয়তায় রয়েছে বিদ্যালয়, মসজিদ, সড়ক ও কবরস্থানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
উত্তর ছনকার বাসিন্দা ছবিয়া খাতুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, এর আগেও কয়েকবার ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এবারও ভিটেমাটি রক্ষার আশা দেখি না। গবাদিপশু নিয়ে কোথায় যাব বুঝতে পারছি না।
একই গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, এই ভাঙন রোধ না হলে শিগগিরই প্রায় দেড় থেকে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। এ ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় স্থাপনাও মারাত্মক ঝুঁকিতে।
স্থানীয় নবীনুর রহমান বলেন, ভাঙনে আমরা সবকিছু হারাচ্ছি। এমনকি কবরস্থানও এখন নদীর পেটে চলে যাওয়ার উপক্রম।
৭২ বছরের শামসুল হক বলেন, নদীর ভাঙনে এতদিনে ১৩ বার ঘর সরিয়েছি। বয়সের কারণে আর লড়াই করার শক্তি নেই।
বরাইদ ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আবুল হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে অন্তত ১০টি বাড়ি নদীতে তলিয়ে গেছে। বর্তমানে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার ও ফসলি জমি মারাত্মক ঝুঁকিতে।
বরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী মোহাম্মদ আব্দুল হাই বলেন, অবিলম্বে পদক্ষেপ না নিলে ছনকা, গোপালপুর, শালুয়াকান্দিসহ একাধিক গ্রাম নদীতে হারিয়ে যাবে। প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, নদীভাঙন রোধে ইতোমধ্যে একটি বিদ্যালয় রক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।