খেলা নিয়ে ইটনায় ইউএনও’র বাসভবনের সামনে হট্টগোল, গ্রেপ্তার ১

কিশোরগঞ্জের ইটনায় মিনি স্টেডিয়ামে খেলাকে কেন্দ্র করে ইউএনও’র বাসভবনের সামনে গিয়ে হট্টগোল, হামলা, দায়িত্বরত পুলিশ, আনসার ও প্রশাসনের কর্মচারীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করার প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে কর্মরত আনসার সদস্য বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
১৪ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইটনা মিনি স্টেডিয়ামে খেলাকে কেন্দ্র এই ঘটনা ঘটে। কিছুদিন পূর্বে, উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই সদর ইউনিয়নের কিছু যুবককে নিয়ে একটি অস্থায়ী আইনশৃঙ্খলা কমিটি গঠন করে টুর্নামেন্ট চলতে থাকে এবং সেখান থেকে ইউএনও’র কাছে অভিযোগ আসে খেলার পাশাপাশি জুয়া খেলা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্তের স্বার্থে ইউএনও টুর্নামেন্ট বন্ধ রাখতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লোকজন জানান, খেলা চলাকালীন ওসি মাঠে এসে ইউএনও’র বরাতে জানান যে, খেলা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইউএনও’র অনুমতি ছাড়া কোনো টুর্নামেন্ট খেলা যাবে না। তথ্যটি সাথে সাথে সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়লে তিন-চারশো উৎসুক জনতা মিছিল নিয়ে ইউএনও অফিসে যায়। তখন ইউএনও কে অফিসে না পেয়ে ইউএনও’র বাসভবনের সামনে গিয়ে হট্টগোল, হামলা, আনসার ও পুলিশ সদস্যদের সাথে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। ইউএনও’র বাসভবনের গেটে ইটপাটকেলও নিক্ষেপ করে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসের উপ প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ফজলুর রহমান পটল বলেন, হঠাৎ করে ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষ উপজেলায় ঢুকে হট্টগোল শুরু করে। আমরা গিয়ে তাদেরকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বাসভবনের সামনে থেকে নিয়ে আসি তারপরও আনসার, পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। তখন ইউএনও স্যার বাসভবনে ছিলেন না কিন্তু উনার পরিবার ছিল, তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
এ প্রসঙ্গে ইটনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাফর ইকবাল জানান, গতকাল ইউএনও’র বাসভবনের সামনের ঘটনায় বাসভবনে কর্মরত আনসার সদস্য বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরার জন্য অভিযান চলছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি সদর ইউনিয়নের বড় হাটির হাজী খুরশিদ মিয়ার ছেলে হাফেজ আব্দুর নূর।
এ বিষয়ে ইটনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে স্থানীয়দের দাবি ছিল এই মাঠে যেন খেলাকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের আইন বহির্ভূত কার্যক্রম যেমন জুয়া খেলা অনুষ্ঠিত না হয় এবং বড় ধরনের টুর্নামেন্ট খেলা না হয়। বড় ধরনের টুর্নামেন্ট খেলা হলে এলাকার ছেলেরা খেলতে পারে না যার জন্য আমি বলেছিলাম বড় ধরনের টুর্নামেন্ট খেলা হলে আমাকে অবগত করার জন্য, আর মাঠে বৃষ্টির মধ্যে খেললে নষ্ট হয়ে যায়, কিছুদিন গ্যাপ দিয়ে দিয়ে খেলার জন্য বলে ছিলাম। তারা আমার কথা অমান্য করে যখন খেলতে থাকে তখন পুলিশ বাধা দিলে উপজেলা এবং আমার বাসভবনে সামনে গিয়ে হট্টগোল করে হামলা চালায়, দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসারদের সাথে খারাপ আচরণ করে এমন কি গায়ে হাত তোলে। তখন আমি বাসভবনে ছিলাম না আমার পরিবার ছিল, তারা জীবনের ঝুঁকিতে পড়ে যায়। বিষয়টা খুব নিন্দনীয় কাজ হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।