মেঘনায় কোটি টাকার বালু লুটের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মেঘনা নদী থেকে কোটি টাকার বালু লুটের অভিযোগ উঠেছে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দিনরাত বালু উত্তোলনের ফলে মানচিত্র থেকে বিলীন হওয়ার পথে মেঘনার তীরবর্তী কয়েকটি গ্রাম। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) উপজেলার চরলাপাং, মানিকনগর, সাহেবনগরসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, বালু উত্তোলনের খননযন্ত্রের গর্জনে কেঁপে ওঠছে চারপাশ।
ইতোমধ্যে কয়েকটি গ্রামের ফসলি জমি, মসজিদ-মাদ্রাসা, ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এখানে বালুমহল ঘিরে চলে সশস্ত্র মহড়া। কেউ প্রতিবাদ করলেই তার জীবন হুমকির মুখে পড়ে।
জানা গেছে, নাসিরাবাদ বালুমহাল আট কোটি ৯৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছে সাহেবনগরের শাখাওয়াত হোসেনের প্রতিষ্ঠান মেসার্স সামিউল ট্রেডার্স। স্থানীয়দের অভিযোগ, ইজারার নিয়ম না মেনে রাতদিন চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। এতে যুক্ত আছেন স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শতাধিক প্রভাবশালী নেতাকর্মী।
এদিকে গত ১০ আগস্ট বিকেলে সোনারগাঁও থেকে সলিমগঞ্জের গণিশাহ মাজারে ওরশে যেতে থাকা একটি ট্রলার ধরাভাঙ্গা এলাকায় বালুবোঝাই ড্রেজারের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা খায়। মুহূর্তেই ট্রলারটি ডুবে যায় এবং আশরাফ উদ্দিন (৪৪) নামের এক যাত্রী মারা যান।
নবীনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মেহেদী হাসান বলেন, ‘এখনই সবাই মিলে রুখে দাঁড়াতে না পারলে চরলাপাং, মানিকনগরসহ আশপাশের গ্রামগুলো মানচিত্র থেকে মুছে যাবে। ইজারার নামে সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরের মতো এখানে দিনে-রাতে কোটি কোটি টাকার বালু লুট হচ্ছে।’ তিনি এ ব্যাপারে প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে ইজারাদার শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমরা সরকারি নিয়ম মেনেই কাজ করছি। অস্ত্র মহড়া বা রাতে বালু উত্তোলনের অভিযোগ সঠিক নয়। প্রশাসনকে বলেছি, রাতে কোনো ড্রেজার চললে জব্দ করতে।’
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব চৌধুরী এ বিষয়ে জানান, বালু উত্তোলনের নামে অবৈধ কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তার কাছে এসেছে এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে অভিযান পরিচালনা জটিল হয়ে পড়েছে, কারণ সেখানে মাঝে মাঝে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে শিগগিরই যৌথ বাহিনী নিয়ে অভিযান চালানো হবে।