ভাইয়ের প্রাণের বিনিময়ে মুক্ত বাংলাদেশে কথা বলছি : শহীদ সৈকতের বোন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ শ্রাবন্তী বলেছেন, ‘আমার ভাইসহ সব শহীদ ভাইয়ের প্রাণের বিনিময়ে আজ আমি মুক্ত, স্বাধীন বাংলাদেশে আপনাদের সামনে কথা বলছি। এক বছর আগে এই দিনে একটি স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছিল। তৎকালীন অবৈধভাবে নির্বাচিত সরকারপ্রধান পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। বাংলাদেশে যার নজির ইতিপূর্বে দেখা যায়নি।’
আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সাবরিনা আফরোজ শ্রাবন্তী।
সাবরিনা আফরোজ শ্রাবন্তী আরও বলেন, ‘এই অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থান আমাদেরকে অর্জন করতে হয়েছে বহু ত্যাগের বিনিময়ে। আমার ভাই শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকতসহ আমার সব শহীদ ভাই-বোনদের আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।’
শহীদ ভাই সৈকতের স্মৃতিচারণা করে সাবরিনা আফরোজ শ্রাবন্তী বলেন, ‘আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোডের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে স্বৈরাচারী বাহিনীর গুলি আমার ভাইয়ের প্রাণ কেড়ে নেয়। ওইদিন আমার পরিবার যখন আমার ভাইয়ের লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পায়, তখন তার মাথায় ছিল রক্তাক্ত ব্যান্ডেজ। মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা ছিল গানশট। এই গানশট শুধু আমার ভাইয়ের মাথায় নয়, আমার পুরো পরিবারের মাথায় লেগে ছিল, বাংলাদেশের হৃদয়ে লেগেছিল। আামার ভাইয়ের উচ্চতা ছিল ৬ ফুট ২ ইঞ্চি। আমার বাবা সবসময় আমার ভাইয়ের উচ্চতা নিয়ে গর্ব করতেন। অথচ সেই উচ্চতাই আমাদের সবার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াল। গুলি এসে ছিদ্র করে দিয়ে গেল আমার ভাইয়ের মাথা।’
সাবরিনা আফরোজ শ্রাবন্তী আরও বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবার যখন দেখি, আজ আমরা পুরো দেশের পরিবার হয়ে গেছি। তখন আমি কিছুটা স্বস্তি বোধ করি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠি।’