রৌমারীতে কাদা-গর্তে ভরা রাস্তায় সীমাহীন দুর্ভোগ

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের মোল্লারচর এলাকার একমাত্র কাঁচা রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি পরিণত হয় কাদায় ভরা এক চলাচল অনুপযোগী পথে। প্রতিদিন এই রাস্তায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন স্কুল শিক্ষার্থী, কৃষক, শ্রমজীবীসহ হাজারো মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি কাদা ও গর্তে ভরে গেছে। এতে চলাচল দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। মোল্লারচর, বেহুলারচর, খাটিয়ামারী, লাইবাড়ি কান্দা, সুতিরপাড়, শৌলমারী হাফাতি কান্দা ও ফকিরপাড়া এলাকার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ এই রাস্তার ওপর নির্ভরশীল। রাস্তার পাশে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মসজিদ ও একটি বিজিবি ক্যাম্প। এসব স্থানে পৌঁছাতেও রাস্তাটির কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
রাস্তাটি দিয়ে সীমান্তে টহলের জন্য নিয়মিত যাতায়াত করেন বিজিবি সদস্যরাও। কিন্তু বৃষ্টির সময় কাদা এমন মাত্রায় পৌঁছে যে, কখনও কখনও তাদের দায়িত্ব পালনে বিঘ্ন ঘটে। অপরদিকে কৃষকরাও চরম বিপাকে আছেন। মাঠের ধান, শাকসবজি ও অন্যান্য ফসল পরিবহণের কোনো উপায় থাকে না। যানবাহন না চলায় পণ্য কাঁধে করে বহন করতে হচ্ছে। এতে সময় ও খরচ দুটিই বেড়ে যাচ্ছে।
আছমত আলী নামের এক কৃষক বলেন, আমাদের ফসল মাঠেই পড়ে থাকে। ট্রলিও চলে না। ভ্যানও আটকে যায় কাদায়। কেউ দেখে না আমাদের কষ্ট।
কয়েকজন কৃষক জানান, তারা মাঠ থেকে ধানসহ অন্যান্য ফসল সংগ্রহ করে বাজারে আনতে পারেন না। কাদা ও ভাঙা রাস্তার কারণে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। মালামাল কাঁধে করে বহন করতে গিয়ে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকরা। বিভিন্ন সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম, দুটি ইউনিয়নের মাঝামাঝি রাস্তাটি। জনগণের কথা ভেবে নিজ উদ্যোগে একবার ঠিক করা হয়েছে, তাতে টেকসই সম্ভব নয়। সরকারিভাবে রাস্তাটি পাকা করে দিলে জনগণের কষ্ট দুর হতো।
রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘রাস্তাটি পাকা করণের বিষয়ে আলোচনা চলছে। আশা করি, দ্রুত একটা ব্যবস্থা হবে।’
জনগণের দুর্ভোগ যাতে না হয়, সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন উপজেলা প্রকৌশলী মুনছুরুল ইসলাম।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, যেকোনো নাগরিক সমস্যা সমাধানে প্রশাসন সবসময় পাশে রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে রাস্তাটি পাকাকরণের পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা চলছে। আমরা চাই, সীমান্ত এলাকার জনগণ যেন উন্নয়নের মূল ধারায় যুক্ত হতে পারে এবং তাদের যাতায়াতের দুর্ভোগ লাঘব হয়।