‘গণহত্যার বিচার বিএনপি করবে না যারা বলে তারা মতলবাজ’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, গণহত্যাকারীদের বিচার বিএনপি করবে না যারা বলে তারা মতলবাজ।
আজ রোববার (৩ আগস্ট) এক আলোচনা সভায় গণহত্যাকারীদের বিচারের ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা এত বেশি নিপীড়িত, এত বেশি নির্যাতিত, এত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত— আমরা দায়িত্ব পেলে এই অপরাধীদের বিচার বিলম্বিত হবে কিংবা কোনোভাবে বিঘ্নিত হবে— এটা যারা বলে তারা মূর্খ ছাড়া কিছু না। তারা মতলববাজ।
তিনি বলেন, কারণ তাদের এই বক্তব্যের পেছনে কোনো সৎ যুক্তি থাকতে পারে না। আমাদের চেয়ে বেশি এই আওয়ামী দুষ্কৃতিকারীদের বিচার কেউ করে নাই। আমরা সবচেয়ে বেশি খুশি হবো তাদের সুবিচার করলে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা চাই গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্টদের সুবিচার হোক কিন্তু বিলম্বিত বিচার না। এত স্পষ্ট এদের অপরাধ, এত স্পষ্ট প্রমাণ— এদের বিরুদ্ধে যেটা নিশ্চিন্তে বলা যায়, তাদের সাজা হবে, হওয়া উচিতও। এটা আমাদের বড় দাবিও।
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টির উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি পালন উপলক্ষে ‘ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠাই জুলাইয়ের অঙ্গীকার’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশের জনগণের একটা নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার যে আকাঙ্ক্ষা সেটা পূরণের জন্য নির্বাচন বিলম্ব করবেন কেন? না করা উচিত? আমরা মনে করি যে, দেশে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ অলরেডি শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বলেছে যে, তারা ভোটার তালিকা করে ফেলেছে। এমনকি আমাদের প্রবাসী যারা আছেন তাদেরকে ভোটার করার চেষ্টা করছে। ভোট দেওয়ার জন্য এলাকা নির্ধারণের বিধান আছে সেটাও তারা করেছে। আগামী ১০ তারিখের মধ্যে কোনো অভিযোগ থাকলে জানাতে বলেছে। এই মাসের মধ্যে এই সীমানা নির্ধারণের কাজটা শেষ হবে বলে আমরা আশা করি।
তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের কাজও প্রায় শেষ। এমনকি জুলাই সনদের যে ড্রাফট আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে আমরা তাতে কিছু ভাষা প্রয়োগে ক্রটি, বাক্য গঠনে ক্রটি কিংবা শব্দ আরও সঠিক হতে পারে… এছাড়া আর কোনো পরিবর্তনের প্রস্তাব আমরা করি নাই। আমরা একমত হয়েছি। এমনকি সেই সনদে এমন প্রতিশ্রুতির কথাও লেখা আছে— রাজনৈতিক দলগুলো সেখানে স্বাক্ষর করে বলব যে, এই সনদে যা লেখা থাকবে এটা যেই আমরা নির্বাচিত হই বাস্তবায়ন করব। আমরা রাজি হয়েছি। তাহলে নির্বাচনের বিলম্ব কেন, নির্বাচন কমিশন যদি প্রস্তুত থাকে?
সভাপতির বক্তব্যে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলে আমাদের দলের নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। গত ২৯ মে আদালত আমাদেরকে নিবন্ধন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। সুখবর হলো— নির্বাচন কমিশন আমাদের দল বাংলাদেশ লেবার পার্টিকে নিবন্ধন দিয়েছে এবং আমাদের প্রতীক হচ্ছে আনারস। আগামী সপ্তাহে আমরা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে এই প্রতীক গ্রহণ করব ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, সরকারকে বলব, নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা বন্ধ করে দ্রুত তারিখ ঘোষণা করুন। নইলে আপনাদের পরিণতি শ্রীলঙ্কার মতো হবে।
আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য গোলাম সারোয়ার, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, লেবার পার্টির জহুরা খাতুন জুই, মাহবুবে রহসান খালেদ, আলাউদ্দিন আলী, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুর রহমান খোকন, হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, তরিকুল ইসলাম সাদীসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা বক্তব্য দেন।