দেশব্যাপী অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে সাঁড়াশি অভিযান

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নির্দেশে তিতাস গ্যাস গতকাল বুধবার (৯ জুলাই) ঢাকা, মেঘনাঘাট ও সাভারের আশুলিয়া এলাকায় সমন্বিত অভিযান চালিয়ে শত শত অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। এই অভিযানে রাষ্ট্রের প্রায় ৩০ লাখ টাকা মাসিক আর্থিক ক্ষতি রোধ করা সম্ভব হয়েছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে অবৈধ কারখানায় উচ্ছেদ
তিতাস গ্যাসের মেট্রো ঢাকা গ্যাস বিক্রয় বিভাগ-২ এর আওতাধীন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বরে দুটি নামবিহীন অবৈধ কারখানায় অভিযান চালানো হয়। একটি তার তৈরির অবৈধ কারখানায় দুটি তাপাই ভাট্টি ও দুটি গ্যাস নজল ব্যবহার করে প্রতি ঘণ্টায় এক হাজার ৮০০ ঘনফুট গ্যাস চুরি করা হচ্ছিল। অন্য একটি ওয়াশিং কারখানায় চারটি ড্রায়ার ও একটি বয়লার ব্যবহার করে প্রতি ঘণ্টায় এক ৭০০ ঘনফুট গ্যাস অবৈধভাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। উভয় কারখানার সার্ভিস লাইন উৎস পয়েন্ট থেকে সম্পূর্ণরূপে ‘কিল’ করে অবৈধ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। এই অভিযান থেকে মাসিক আনুমানিক সাত লাখ ৪২ হাজার ১৪০ টাকা মূল্যের গ্যাস সাশ্রয় করা হয়েছে। অভিযানটি পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মনিজা খাতুন।
গজারিয়ায় চুন কারখানার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন
জোবি-মেঘনাঘাটের আওতাধীন বালুয়াকান্দি ও ভাটের চর এলাকায় দুটি অবৈধ চুন কারখানার (মোট ১০টি ভাট্টি বিশিষ্ট) অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ করা হয়েছে। অভিযানকালে প্রায় ৩০ ফুট দুই ইঞ্চি ব্যাসের এমএস পাইপ, ২০ ফুট তিন ইঞ্চি ব্যাসের হেডার ও ৩৫০ ফুট হোজ পাইপ অপসারণ করে বিনষ্ট করা হয়। এই অভিযান থেকে দৈনিক আনুমানিক ২০ হাজার ঘনফুট গ্যাস সাশ্রয় করা হয়েছে, যার মূল্য তিন লাখ ২৬ হাজার ২০৯ টাকা। কারখানা মালিকদের ঘটনাস্থলে না পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক জেল বা জরিমানা করা সম্ভব হয়নি। তবে ভাট্টির মালিক/জমির মালিকের বিরুদ্ধে গজারিয়া থানায় এফআইআর দায়ের করা হবে। অবৈধ চুন কারখানার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর এক্সক্যাভেটর মেশিনের মাধ্যমে স্থাপনা ভেঙে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, গজারিয়া এর সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। অভিযানটি পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সিমন সরকার।
আশুলিয়ায় বৃহৎ পরিসরে অবৈধ আবাসিক ও বাণিজ্যিক সংযোগ উচ্ছেদ
আশুলিয়া, সাভারের গোরাট, চৌরাস্তা ও সরকার মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় পরিচালিত অভিযানে মোট দুই কিলোমিটার দীর্ঘ অবৈধ বিতরণ লাইন এবং আনুমানিক ৬০০টি অবৈধ আবাসিক গ্যাস বার্নার বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়া, কোয়ালিটি থ্রেড এন্ড এক্সেসরিজ ও মায়ের দোয়া এক্সেসরিজ নামের দুটি বাণিজ্যিক কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এই অভিযানে মোট এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং প্রায় ৫০০ মিটার পাইপ অপসারণ করা হয়েছে। এই অভিযানের ফলে প্রতি মাসে প্রায় ১৯ লাখ ৪৪ হাজার ৯১১ টাকা মূল্যের গ্যাস চুরি রোধ করা সম্ভব হয়েছে। অভিযানটি পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সৈকত রায়হান।
অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে এবং অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।