আমের ভরা মৌসুমেও হাসি নেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাষিদের মুখে

আম উৎপাদনের জন্য খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে এখন চলছে পাকা আমের মৌসুম। বাগান ও বাজারে চলছে আম সংগ্রহ ও বিক্রির ব্যস্ততা। ফলন ভালো হলেও আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় চিন্তিত আমচাষিরা।
জেলার কানসাট, ভোলাহাট ও রহনপুর বাজারে এখন ল্যাংড়া, খিরসাপাত, আম্রপালি, ফজলি, ব্যানানা ম্যাংগোসহ বিভিন্ন জাতের আম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ৪ হাজার টাকা মণ দরে। তবে চাষিরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় দাম কম। অথচ সার, সেচ, শ্রমিক ও ওষুধের খরচ বেড়েছে। এতে উৎপাদন খরচ তুলতে পারছেন না অনেকেই।
চাষি আব্দুর রাকিব বলেন, গত বছর খিরসাপাতের শুরু দাম ছিল ২ হাজার ৯০০ থেকে ৩ হাজার টাকা, এবার তা ছিল ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা। এখন দাম বাড়লেও বাগানে তেমন আম নেই।
চাষি এরফান জানান, আবহাওয়া, ঈদের ছুটি আর বৃষ্টির কারণে আম ঠিক সময়ে পাড়া যায়নি। এতে আমে দাগ ও ফাটল দেখা দিয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. ইয়াছিন আলী বলেন, আম একটি পচনশীল ফল। গাছ থেকে পাড়ার পরে দ্রুত পেকে যায় এবং একপর্যায়ে পচে যায়। আসলে আমাদের কুরবানি ঈদের আগে বেশ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় আম দ্রুত পাকা শুরু করে, যার জন্য ওই সময় কৃষকরা আম হারভেস্ট করে। কিন্তু ঈদের একটি লম্বা ছুটি পড়ে যাওয়ায়, বিশেষ করে ঢাকায় যেসব ভোক্তা ছিলেন তারা গ্রাম-গঞ্জে চলে আসেন। এতে আমের যে চাহিদা সেটি ছিল না, যার জন্য ঈদের সময় বা ঈদের পর কিছুদিন আমের বাজারমূল্য কম ছিল।
তিনি বলেন, তবে বর্তমানে আবার ভোক্তাদের মধ্যে চাহিদা বেড়েছ। তাই আমের বাজারমূল্যও একটু বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আমি মনে করি, এই মূল্যটা আরও একটু বৃদ্ধি পাওয়া দরকার, যাতে কৃষক লাভবান হতে পারেন। কারণ, উৎপাদন খরচ পুষিয়ে যদি কৃষক লাভবান না হয়, সে ক্ষেত্রে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
ইয়াছিন আলী আরও বলেন, কৃষি বিভাগের হিসেবে চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। আর এ থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯০ টন। গত বছর আম উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৪৮ হাজার টন।