দিনাজপুরে পাটের ভালো দামে বাড়ছে চাষিদের আগ্রহ

গত কয়েক বছর পাটের দাম কম থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন দিনাজপুরের কৃষকরা। তবে চলতি বছর পাটের ন্যায্য ও ভালো দাম পাওয়ায় তাদের সুদিন ফিরতে শুরু করেছে। চাষিদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামীতে পাটের উৎপাদন বহুগুণ বাড়বে বলে আশাবাদী কৃষি বিভাগ।
চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল জানান, গত কয়েক বছর প্রতি মণ পাটের দাম ছিল ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। এ বছর পাটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার টাকা দরে। তিনি বলেন, কৃষকেরা এখন সহজে বাজারে পাট বিক্রি করতে পারছেন।
ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদিপুর গ্রামের কৃষক ধীরেন্দ্র দেবনাথ জানান, পাটের ভালো দামের পাশাপাশি জ্বালানি হিসেবে পাটখড়ির দামও আশানুরূপ (৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মণ) পাওয়া যাচ্ছে। পাটখড়ি বিক্রি করে কৃষকেরা বাড়তি আয় করতে পারছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানান, চলতি বছর জেলায় ৭৬০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা প্রতি হেক্টর জমিতে ১১ দশমিক ৯৩ বেল হিসেবে মোট ৯ হাজার ৬৬ দশমিক ৮ বেল নির্ধারণ করা হয়।
আফজাল হোসেন বলেন, বিগত সময়ে পাটজাত পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় চাষিদের আগ্রহ কমে গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে পরিবেশবান্ধব পাটজাত পণ্যের কদর বেড়েছে। তাই পাটের পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় এবারে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পাটের ভালো মূল্য পেয়েছেন।
আফজাল হোসেন আরও বলেন, চলতি মৌসুমের শুরুতে মে মাসে জেলার ১৩ উপজেলার সদর, ফুলবাড়ী, বীরগঞ্জ, কাহারোল ও চিরিরবন্দর উপজেলায় ৫৭২ জন চাষিকে আধুনিক পাট চাষ পদ্ধতির ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ১৩টি উপজেলাতে ৩ হাজার ৮৫০ জন কৃষকের মধ্যে বিনামূল্যে উন্নত জাতের পাটের বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়।
জেলা পাট অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সোলাইমান আলী বলেন, পাট খুবই সম্ভাবনাময় ফসল। এ বছর পাটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। পাট চাষে আগ্রহ বাড়াতে এ বছর সরকারিভাবে উপজেলাগুলোতে বিনামূল্যে উন্নত জাতের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।