বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। এতে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট উঁচু জোয়ারের পানি ঢুকে কক্সবাজার উপকূলের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিশেষ করে সেন্টমার্টিন্স দ্বীপ ও কুতুবদিয়ায়।

এদিকে, মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙা এলাকায় জোয়ারের পানিতে ভেসে গিয়ে দানু মিয়া (৪০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। নিহত দানু মিয়া স্থানীয় নুর হোসেনের ছেলে।

নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে সেন্টমার্টিন্সের বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় প্লাবিত হয়েছে কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া ও টেকনাফ উপজেলার অন্তত ১৫টি এলাকায় ২০টিরও বেশি গ্রাম।

কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের কবি জসীম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের দক্ষিণের ৫০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এর ফলে পূর্ব পাড়া, সন্দ্বীপী পাড়া, হাই স্কুল পাড়া ও শান্তি বাজার এলাকায় অন্তত তিন ফুট পানি ঢুকে পড়েছে। কৈয়ারবিল ইউনিয়নের মৌলভী পাড়া ও মফজল আহমদ পাড়ার ২০০টির বেশি বাড়িতে পানি ঢুকেছে। উত্তর ধুরং ইউনিয়নের মিয়ারাকাটা ও দক্ষিণ ধুরংয়ের বাতিঘর পাড়া এলাকার বেড়িবাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্যথোয়াইপ্রু মারমা জানান, ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলো মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে। 

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল হান্নান জানান, আজ শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ১৩১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামীকাল শনিবার (৩১ মে) পর্যন্ত আবহাওয়া পরিস্থিতি এ রকম থাকতে পারে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জামাল মোর্শেদ জানান, অন্তত ১৫টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব জায়গায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট হওয়া নিম্নচাপ মোকাবিলায় বিভিন্ন প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। যেসব গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে সেসব এলাকার লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। পাশাপাশি সব আশ্রয়কেন্দ্র ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

জেলা প্রশাসক জানান, মহেশখালীতে জোয়ারের পানিতে ডুবে দানু মিয়া (৪০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জেলা প্রশাসক আরও জানান, কুতুবদিয়া উপজেলা সদর উপজেলা মহেশখালী ও সেন্টমার্টিন্স দ্বীপে জোয়ারের পানি ঢুকেছে।