সম্প্রতি ‘ছেলে এক মুসলিম নারীকে ইসলামপন্থীদের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করায় তার বাংলাদেশি হিন্দু মাকে আক্রমণ করেছে ইসলামপন্থীরা’ দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে অপপ্রচার করা ভিডিওটি সত্য নয়। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে। তারা বলছে, ভিডিওর নারী বাংলাদেশি নন বরং তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের বাসিন্দা।

প্রকৃতপক্ষে, আহত নারীর ছেলে প্রেমের সম্পর্কের জেরে একজন মুসলিম নারীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এই পরিবারের লোকজন ছেলেটির বাড়িতে হামলা চালিয়ে ছেলের মাকে আহত করেন। তারই দৃশ্য এটি।

অনুসন্ধানে ওই দাবিতে প্রচারিত পোস্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় ভিডিওর ক্রেডিট দেয়া হয়েছে Avroneel Hindu নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টকে। যে অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত মূল পোস্ট থেকে জানা যায়, ‘ভারতের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার থানার অধীনে শ্যামসুন্দর গ্রামে, স্থানীয় মুসলিম চরমপন্থীরা একজন হিন্দু ছেলের বাড়িতে আক্রমণ চালিয়েছে। কারণ, ছেলেটি একজন মুসলিম নারীকে বিয়ে করেছে। তারা ছেলেটির বাড়ি ভাঙচুর করেছে এবং ছেলেটির মাকে আহত করেছে।’

পরবর্তী অনুসন্ধানে বাংলার কথা নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ২২ ডিসেম্বর প্রকাশিত ‘অবৈধ সম্পর্কের জেরে মার খেতে হলো ছেলের মাকে’ শীর্ষক একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আহত নারীর নাম শঙ্করী ভূঁইয়া। মূলত তার ছেলে শুভঙ্কর ভূঁইয়ার সঙ্গে ফিরোজা খাতুন নামের মুসলিম এক নারীর চার বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ছয় মাস আগে ফিরোজা খাতুনের অন্যত্র বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরও তাদের প্রেমের সম্পর্ক বজায় থাকে। মাস খানেক আগে তারা পালিয়ে যায়। মেয়ের কোনো খোঁজ না পাওয়ায় মেয়ের পরিবার ছেলের বাড়িতে হামলা চালায়। অর্থাৎ, হামলায় আহত নারীটি বাংলাদেশি নন।

সুতরাং, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু নারীকে মারধরের দৃশ্যকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।