বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও অর্থনৈতিক সমতায় বিশ্বাসী ছিলেন : রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, বাঙালি ও বাংলাদেশ একে অপরের পরিপূরক এবং অভিন্ন সত্ত্বা। তিনি বলেন, ‘মানবিক বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও অর্থনৈতিক সমতায় বিশ্বাসী ছিলেন।’ গতকাল শনিবার (২৬ আগস্ট) বঙ্গভবনের দরবার হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত অ্যানিমেশন মুভি ‘মুজিব ভাই’ প্রদর্শনের পূর্বে এসব কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জীবন-কর্ম, ত্যাগ, তিতিক্ষা—সবগুলো মানবীয় গুণাবলীর সমন্বয়ে বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন অনন্য বাঙালি।’ বঙ্গবন্ধুর গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপের সবগুলো গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ লাভ করে তাঁকে করে তুলেছিল অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও অন্যান্য মানবিক গুণাবলীর সমন্বয়ের এক অনন্য মানুষ।’
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘চরিত্রের বিভিন্ন নাটকীয়তা, মানবিক গুণাবলী, শৈশব ও কৈশোরের মানবিক কর্মকাণ্ড সবকিছুর সমন্বয়ে বঙ্গবন্ধু ছিলেন এক অনন্য বাঙালি।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কতটা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন, তাঁর প্রমাণ তিনি কলকাতায় দাঙ্গার সময়ও দিয়েছেন।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমি জাতির পিতাকে নিয়ে গর্ববোধ করি। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল, ছয়বার তাঁর সান্নিধ্য পাওয়ার, দুইবার স্বাধীনতার পূর্বে আর চারবার স্বাধীনতার পরে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয় ১৯৭৫ সালের জানুয়রিতে।’
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাকে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের (বাকশাল) পাবনা জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেছিলেন।’
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আরও বলেছেন, অর্থনৈতিক সমতায় বিশ্বাসী বঙ্গবন্ধু মুজিবকে জানতে হলেও বাঙালি ও বাংলাদেশের ইতিহাসকে জানতে হবে। তিনি আশা করেন, আইসিটি বিভাগ নির্মিত ‘মুজিব ভাই’ অ্যানিমেশন মুভি জাতির পিতার জীবন ও কর্ম এবং আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সক্ষম হবে।
‘মুজিব ভাই’ অ্যানিমেশন মুভিটি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তরের একটি প্রয়াস উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি চলচ্চিত্রটির পরিচালক, প্রযোজক, কলাকুশলীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি আশা করেন, আইসিটি বিভাগ তাদের নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন, প্রসার ও ব্যবহারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু, বাঙালি ও বাংলাদেশের ইতিহাসকে তুলে ধরতে নিরবচ্ছিন্ন প্রয়াস চালাবে এবং বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও স্মার্ট দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী অধ্যাপক ড. রেবেকা সুলতানা, রাষ্ট্রপতির কার্যালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সম্মানিত সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।