একতরফা নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না এবং নির্বাচনও করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার নয়ামাটি এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে পুলিশের গুলিতে অন্ধ হওয়া ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটুকে দেখতে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, বিএনপি নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়কসহ সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য দিপু ভূঁইয়া, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন প্রমুখ।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য শেখ হাসিনা জনগণের বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন৷ নিজের মতো করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সাজিয়ে নিয়েছেন৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আর পেটোয়া বাহিনী দিয়ে তরুণদের হত্যা করছেন, চোখের অলো কেড়ে নিচ্ছেন, হাতের কব্জি কেটে ফেলছেন, পা কেটে ফেলছেন৷ এটা আর চলবে না, জনগণ আর চলতে দেবে না৷ যুবক-তরুণরা জাগ্রত হয়েছে প্রতিহত করার জন্য৷”

বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কদিন আগে বলেছেন, তাঁকে নাকি সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে৷ আপনাকে তো সরাবে জনগণ৷ কাকে ক্ষমতায় রাখবে তা জনগণই বেছে নেবে৷ জনগণ চাচ্ছে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) পদত্যাগ করুন৷ আর নির্বাচনকালীন একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার দিন; যাতে জনগণ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারে৷ জনগণই তো দেশের মালিক৷ কাকে রাখবে আর কাকে সরাবে, সেটা তো জনগণের অধিকার৷ এটাকেই তো গণতন্ত্র বলে৷’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের অর্থ জানেন না মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “আপনি যেভাবে ক্ষমতায় থাকতে চান সেটার শিকার হচ্ছে বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলাম টিটু৷ অর্থাৎ দেশে বিরোধীদলের জন্য কথা বলার কোনো জায়গা থাকবে না৷ সরকার একের পর এক অন্যায়, লুটপাট, টাকা পাচার করবে, এটার বিরুদ্ধে কথা বলার, মিছিল করার, স্লোগান দেওয়ার কোন লোক থাকবে না৷ আর যদি থাকে তাহলে তাদের পরিস্থিতি হবে শহীদুল ইসলাম টিটুর মতো৷ শেখ হাসিনার জোর করে ক্ষমতায় থাকার পরিণতি হচ্ছে টিটুর চোখের দৃষ্টি চলে যাওয়া৷”

‘বিএনপি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে না৷ আমরা সেই নির্বাচন প্রতিহত করতে চাই, যেখানে জনগণ অংশগ্রহণ করে না, ভোটাররা ভোট দিতে পারে না৷ শেখ হাসিনার একতরফা নির্বাচনে আর অংশগ্রহণ করব না এবং তাকে করতেও দেব না৷’ যোগ করেন তিনি৷

রিজভী আরও বলেন, “জনগণকে ত্যাজ্য করে নির্বিঘ্নে ক্ষমতায় থাকবেন তা হতে পারে না৷ কোন ত্যাগ বৃথা যায় না৷ এই ত্যাগের বিনিময়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হবে৷ বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র অবশ্যই ফিরে আসবে৷ রক্তচক্ষু নিয়ে যেভাবে শেখ হাসিনা শাসন করছে, তার পতন হবে৷ গণতন্ত্র ফেরাতে বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রাম চলবে।”