৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা হানাদারমুক্ত দিবস

৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা হানাদারমুক্ত দিবস। জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা জেলা ইউনিট কমান্ডের উদ্যোগে নানা কর্মসূচিতে পালন করা হয় দিবসটি। সকালে জেলা কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে ভাস্কর্য প্রজন্ম শপথ ও সাতপাই স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পাবলিক হলে জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের পতাকা উত্তোলন হয়। পরে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, জেলা প্রশাসক ড. মুশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নূরুল আমীনের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শেষে পাবলিক হলে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত নেত্রকোনা জেলার রয়েছে গৌরবময় ইতিহাস। রণাঙ্গনে এখানকার প্রায় তিন হাজার মানুষ সরাসরি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে। স্বাধীনতা অর্জনে প্রাণ দিতে হয় ৬০ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় এক হাজার সাধারণ মানুষকে।
হানাদাররা ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল নেত্রকোনায় প্রবেশ করে। দালালদের সঙ্গে নিয়ে তারা মেতে ওঠে নির্যাতন আর হত্যাযজ্ঞে। মানুষকে ধরে এনে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে ফেলে দেয় নেত্রকোনার মোক্তারপাড়া ব্রিজ, নেত্রকোনা থানার পাশে নদীরপাড়, চন্দ্রনাথ স্কুলের নদীর পাড়, চল্লিশা রেল ব্রিজে।
নেত্রকোনাকে মুক্ত করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধারা ৮ ডিসেম্বর তিন দিক থেকে পাকসেনাদের সঙ্গে লাগাতার যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকে। ৯ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা কৃষিফার্ম এলাকায় ওত পেতে হানাদারদের ওপর আক্রমণ করে। এ সময় সরাসরি যুদ্ধে শহীদ হন আব্দুল জব্বার, আব্দুর রশিদ ও আব্দুর সাত্তার। এই যুদ্ধে বহু পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয়। অবশেষে পাকসেনারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। হানাদারমুক্ত হয় নেত্রকোনা।