নানা আয়োজনে ‘তেরশ্রী গণহত্যা’ দিবস স্মরণ

আজ ২২ নভেম্বর। ‘তেরশ্রী গণহত্যা’ দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক্স্তিান হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী, সেনপাড়া, বড়রিয়া এবং বড়বিলা গ্রামের ঘুমন্ত মানুষের ওপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। নির্বিচারে গুলি, বেয়নেট চার্জ ও বাড়িঘরে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যা করে তেরশ্রী জমিদার সিদ্ধেশ্বর প্রসাদ রায় চৌধুরী, অধ্যক্ষ আতিয়ার রহমানসহ ৪৩ জন নিরীহ মানুষকে।
প্রতিবছরের মতো এবারও তেরশ্রী গ্রামের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে জাতীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন করে দিনটি স্মরণ করেন স্থানীয় লোকজন। পাশাপাশি কালো ব্যাজ ধারণসহ নানা আয়োজন করা হয়। সে সময় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে স্মৃতিস্তম্ভের পাশে একটি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও লাইব্রেরি স্থাপনের দাবি করেছেন নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দিন জানান, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে তেরশ্রী গ্রামে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের পাশে একটি লাইব্রেরি ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
তেরশ্রীর গ্রামবাসীর আন্দোলন ও বিদ্রোহের ইতিহাসটা বেশ পুরোনো। কমিউনিস্ট আন্দোলনের সূতিকাগার ছিল এই তেরশ্রী গ্রাম। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ও ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়তা ছিল গ্রামবাসীর।
পল্লী অঞ্চল হলেও গ্রামবাসীর সচেতনতায় মানিকগঞ্জ জেলার প্রথম কলেজ এ গ্রামেই প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ কলেজ থেকেই দেশবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে বারবার প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। হানাদাররা সেই প্রতিহিংসা মেটায় ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বরে।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা ঘুমন্ত মানুষের ওপর চালায় ছয় ঘণ্টার এক নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় গ্রামের পর গ্রাম।
স্বাধীনতার পর থেকেই তেরশ্রী বাসিন্দারা এই ক্ষত নিয়ে বেঁচে আছেন। প্রতিবছর নানা আয়োজনে ‘তেরশ্রী গণহত্যা’ দিবস পালন করেন তাঁরা। কয়েক বছর আগে তেরশ্রী মোড়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।