ইউনেসকোকে জবাব এক সপ্তাহের মধ্যে : প্রতিমন্ত্রী

সুন্দরবনের পাশে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে ইউনেসকো যে উদ্বেগ জানিয়েছে, তার জবাব আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেবে সরকার।
আজ রোববার সকালে বিদ্যুৎ ভবনে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা ও গবেষকদের নিয়ে আয়োজিত কর্মশালা শেষে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ইউনেসকোর উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে কারিগরি বিষয়গুলো সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানানো হবে আন্তর্জাতিক ওই সংস্থাটিকে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলে কোনো পরিবেশের জন্য আশঙ্কা বা উদ্বেগের কিছু নেই বলেও মনে করেন প্রতিমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে ২০১৮ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করেই সরকার রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছে ।
রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনা নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ জানায় জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো।
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি, সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটিসহ বেশ কিছু সংগঠন এই বিদ্যুৎ নির্মাণ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।
বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, আজকের কর্মশালার আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে গবেষণায় এবং উদ্ভাবনে তরুণ প্রকৌশলীদের সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ কাউন্সিল (ইপিআরসি) এবং ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এসাব) মধ্যে এক সমেঝোতা স্বাক্ষর স্বাক্ষরিত হয়।
প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের গবেষণা ও উদ্ভাবনে সম্পৃক্ত করার জন্য এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। এসাব এবং ইপিআরসির যৌথ উদ্যোগে বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এসব উদ্যোগের ফলশ্রুতিতে ‘ন্যাশনাল হ্যাকাথন অন পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি’, ‘গ্রিন এনার্জি সামিট’, ‘ইয়ুথ ইনোভেশন স্মল গ্র্যান্টের’ মতো আয়োজনে মেধাবী তরুণ প্রকৌশলীরা একত্রিত হবে এবং দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার সুযোগ পাবে।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘পরিবেশের বিষয়ে সরকার বেশ সচেতন রয়েছে। দেশে নতুন কোনো বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপনের আগে পরিবেশের প্রভাবের ব্যাপারে গবেষণা করে দেখা হচ্ছে। বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপনের আগে আমরা পরিবেশের প্রভাবের বিষয়ে যদি বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের কোনো পরামর্শ থাকে, তবে আমরা তা যথাযথ মূল্যায়ন করব।’
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আরো বলেন, প্রকৌশলী শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ও দেশের বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এই তরুণ শিক্ষার্থীরা, বিশেষ করে প্রকৌশলী শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এসব উদ্ভাবন জনকল্যাণে এবং বিভিন্ন জাতীয় উন্নয়ন প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ইপিআরসির চেয়ারম্যান ড. আহমাদ কায়কায়ুস বলেন, তরুণ প্রকৌশলীদের সামাজিক সমস্যাগুলো সমাধানে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এসাবের সভাপতি মোহাম্মদ ইমতিয়াজ হাসান বলেন, দেশের সমস্যা সমাধানের জন্য মেধাবীদের আরো বেশি সম্পৃক্ত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিইপিআরসির চেয়ারম্যান ড. আহমাদ কায়কায়ুসকে একটি ছোট স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে অন্যান্যের মধ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী ও বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সমাপনী বক্তব্য দেন এসাবের প্রতিষ্ঠাতা ও এসাব ইনোভেশন সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক মো. আরিফ রায়হান মাহি।