চুরির অভিযোগে কিশোরকে রাতভর মারধর, দিনে জুতার মালা

বয়স ১৬ বছর। তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে মোবাইল চুরির অভিযোগ। এজন্য রাতভর তাকে মারধর করা হয়। আর পরের দিন মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়। আর এলাকায় জুতার মালা পরিয়ে ঘোরানো হয়।
আজ বুধবার গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার টেকেরহাট বন্দর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরে ওই কিশোরকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কবির শেখ নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, একই উপজেলার চরপ্রসন্নদী গ্রামের হবি শেখের বাড়ি থেকে মঙ্গলবার রাতে একটি মোবাইল ফোনসেট চুরি হয়। চুরির অভিযোগ ওঠে একই গ্রামের এক কিশোরের বিরুদ্ধে। হবি শেখের ভাই কবির শেখ ওই কিশোরকে বাড়ি থেকে ধরে এনে মারধর করে সারা রাত বাড়িতে আটকে রাখেন। পরে বুধবার সকালে মাথা ন্যাড়া করে জুতার মালা গলায় দিয়ে টেকেরহাট বন্দর বাজার এলাকায় ঘোরায়। শেষে বিষয়টি পুলিশের কানে পৌঁছায়। পুলিশ গিয়ে ওই কিশোরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, কিশোরকে মারধর ও অন্যান্য নির্যাতন করার কথা স্বীকার করেছেন আটক কবির শেখ। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের আরো অনেকে এ ঘটনায় জড়িত বলে দাবি করেছেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে হবি শেখের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন জানায়, শতাধিক মানুষের সামনে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে অথচ কেউ বাধা দেয়নি। হবি শেখের পরিবার প্রভাবশালী বলে কেউ বাধা দেওয়ার সাহস পায়নি বলে তারা জানায়।
এ ব্যাপারে কিশোরের বাবা বলেন, ‘পাঁচ-সাতজন মিলে ছেলেটাকে মারধর করে। আরো লোকজন ছিল। আমি যাওয়ার পর আমাকেও মারধর করে। পরে আমি কৌশলে এলাকা ছাড়তে পারি। পরে ওরে নিয়ে চুল কেটে দিয়েছে, জুতার মালা গলায় দিয়েছে, আগুন দিয়েছে। অনেক মারধর করেছে।’
গোপালগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকার ছেলেরা কিশোরের চুল কেটে দিয়েছে। গলায় জুতার মালা পরিয়ে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়েছে। এ ধরনের একটা তথ্য আমরা পেয়েছি। তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। পুলিশ এ ব্যাপারে কবির শেখ নামের একজনকে আটক করেছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। যদি এ রকম ঘটনা ঘটে তবে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’