তরুকে চিকিৎসক বানানোর স্বপ্ন ছিল বাবার

বাবার স্বপ্ন ছিল, ছেলে চিকিৎসক হবে। সেই ছেলে তৌহিদুল ইসলাম তরুই (১৭) খুন হয়েছে নির্মমভাবে। এর পর থেকে তার বাবা সিরাজুল ইসলাম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। আর মা জাহানারা বেগমকে ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে।
ইফতারের দাওয়াত দিয়ে ডেকে নিয়ে তরুকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর বড় ভাই সাইদুর রহমান তুহিন। তিনি আজ বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, ‘যারা এই কাজ করেছে, তাদের মধ্যে কোনো মানবতা নেই। তারা মানুষের ভালো চায় না, খারপি চায়। বাংলাদেশে যেন এ রকম আর কোনো ঘটনা না ঘটে, আমরা তার উপযুক্ত শাস্তি চাইতেছি।’
গতকাল বুধবার দুপুরে তৌহিদুল ইসলাম তরুকে মুঠোফোনে ইফতারের দাওয়াত দেয় বন্ধু কেফায়েত উল্লাহ বিন নাসির। সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ শহরের আকুয়া চৌরঙ্গীর মোড়ে কমিউনিটি বেইজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (সিবিএমসি) চিকিৎসক মো. নাসির উদ্দিনের বাসায় তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর থেকে কেফায়েত উল্লাহ পলাতক।
তরু এবার নওমহল পীরবাড়ি মাদ্রাসা থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে দাখিল পাস করেছে। তার ভর্তিপ্রক্রিয়া চলছিল। বাবার ইচ্ছা ছিল তাকে চিকিৎসক বানানোর।
তরুর দাদি হাফিজা খাতুন, মা জাহানারা বেগম দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তাকে চিকিৎসক বানিয়ে নিজের পরিবার ও মানুষকে সেবা দেবে—এমনটাই আশা ছিল পরিবারের। কিন্তু এর আগেই ঘাতক কেড়ে নিল তার প্রাণ।
তরুর বাবা সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ফোরম্যান হিসেবে চলতি মাসের ৮ তারিখে অবসর নিয়েছেন। তরুরা তিন ভাই, দুই বোন। তরু সবার ছোট।
এই পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে আকুয়া ওয়্যারলেস এলাকায় শান্তিতেই বসবাস করছিল। হঠাৎ তাদের পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে নেমে এসেছে শেকের ছায়া।
এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। হয়নি কোনো মামলাও।