ময়মনসিংহে আচরণবিধি লঙ্ঘন

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ও সদর উপজেলায় জমে উঠেছে চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। দুটি উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের পোস্টারে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন পেয়ে প্রার্থী, ভোটার ও কর্মী-সমর্থকদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। ভোটারদের মন জয় করতে রাত-দিন বিরামহীন প্রচারে ব্যস্ত প্রার্থীরা।
এর মধ্যেও দেদার চলছে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ। নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তাদের দাবি, আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে বারবার নির্দেশ দেওয়ার পরও কেউ কথা শুনছে না।
অপরদিকে নির্বাচনে কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেছেন বিএনপি প্রার্থীরা। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
চতুর্থ ধাপে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ও সদর উপজেলায় ভোট হবে ৭ মে। দুটি উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংখ্যা ১১৫ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থী ছাড়াও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ১৩ জন, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ১৪ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন।
ঘাগড়া ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাফিজ উদ্দিন অভিযোগ করেন, সুহিলা নামে তাঁর একটি প্রচারকেন্দ্র আওয়ামী লীগ সমর্থকরা বন্ধ করে দিয়েছে। দলের নেতাকর্মী ও ভোটারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ধানের শীষের নির্বাচন করলে, ধানের শীষে ভোট দিলে নির্বাচনের পরে দেখে নেওয়া বলে হুমকি দিচ্ছে।
তবে ওই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাজাহান সরকার সাজু বলেন, ‘বিএনপির অভিযোগ সত্য নয়। বিএনপির কোনো ভাই যদি বলতে পারেন, আমার কোনো কর্মী-সমর্থক বিএনপির কোনো ভাইয়ের ওপর অত্যাচার করছে তাহলে আমি ঘাগড়া ইউনিয়নে মুখ দেখাব না। বিএনপির এই অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট; টোটালি মিথ্যা।’
এদিকে ফুলবাড়িয়া উপজেলার দেওখলা ইউনিয়নে বিএনপির চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আশিকুল হক অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোটরসাইকেল শোডাউন করছেন, ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন ভোটার ও সমর্থকদের। নির্বাচনের পরে বিএনপি থাকবে না বলেও হুমকি দিচ্ছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে নালিশ করেছি। তিনি বলেছেন, তারা করছে, আপনিও করেন।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তাজুল ইসলাম বাবুলের বক্তব্য নিতে গেলে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। বাবুল এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘সবাইকে দেই। আপনিও কষ্ট করে এসেছেন, আপ্যায়নের কিছু টাকা দিই, নিয়ে চলে যান।’
এদিকে এসবের পাশাপাশি চলছে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা। নিষিদ্ধ স্থানে পোস্টার সাঁটানো, মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা চলছেই। যেন দেখার কেউ নেই। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ এগিয়ে থাকলেও বিএনপি পিছিয়ে নেই। ফুলবাড়িয়ার দেওখলা ও সদর উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের সর্বত্র বাসাবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেয়ালে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের নির্বাচনী পোস্টার।
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সানিয়াজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘আমরা সবাইকে সতর্ক করছি কিন্তু কেউ মানছেন না।’
ফুলবাড়িয়া উপজেলায় ১৩টি ইউনিয়নে ৮১ জন চেয়ারম্যান, ১৫৯ জন সংরক্ষিত নারী প্রার্থী ও সাধারণ কাউন্সিলার পদে ৫৩৭ জন প্রাথী রয়েছেন। অন্যদিকে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের আটটি ইউনিয়ন সিটি করপোরেশনে অধিভুক্তির কারণে পাঁচটিতে নির্বাচন হচ্ছে। এই পাঁচটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩৪ জন, সংরক্ষিত নারী প্রার্থী ৬১ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২০৪ জন নির্বাচন করছেন। এ দুটি উপজেলায় আগামী ৭ মে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।