নেত্রকোনায় পর্নোগ্রাফি মামলার আসামি জেলহাজতে

নেত্রকোনায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার আসামি আমিনুল ইসলাম মাসুমের (৩৫) জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে নেত্রকোনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আলমগীর কবির শিপন আসামিকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলায় পলাতক ওই আসামি আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। বিচারক তা নাকচ করে আসামিকে জেলহাজতে পাঠনোর নির্দেশ দেন।
নেত্রকোনা মডেল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহনূর এ আলম জানান, আসামির বিরুদ্ধে আদালতে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের ফচিকা বাজারে মাসুমের ‘নিলা ডিজিটাল মডেলিং স্টুডিও’ থেকে কিছু অশ্লীল ভিডিওসহ আসামির ব্যবহৃত কম্পিউটার জব্দ করা হয়। মাসুম ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. আবুল হাসেমের ছেলে। পরে এ ব্যপারে নেত্রকোনা মডেল থানায় ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আল আমিন পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন।
মামলায় পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে জব্দকৃত ভিডিওর একটিতে আসামি মাসুম অজ্ঞাতপরিচয় এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে এবং অপর ভিডিওতে অজ্ঞাতপরিচয় এক কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। মাসুম এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে স্টুডিও ব্যবসার আড়ালে গ্রামের স্কুলপড়ুয়া কিশোরীদের কৌশলে জিম্মি করে যৌন নিপীড়ন, হয়রানিসহ কিশোরীদের ধর্ষণ করে ভিডিও তৈরি করে চড়া দামে বাজারে বিক্রি করে আসছিল।
একসময় এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে এলাকাবাসী মাসুমকে ধরতে তার স্টুডিওতে ধাওয়া করলে পালিয়ে যায় সে।
এর পর বিভিন্ন সময় মাসুমের বিচার চেয়ে এলাকায় মানববন্ধন, ঝাড়ু মিছিলসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে একপর্যায়ে নিলা ডিজিটাল স্টুডিওটি ভাঙচুর করে এলাকাবাসী। এমনকি মাসুমের বিচার চেয়ে তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. তরুণ কান্তি শিকদার, পুলিশ সুপার (এসপি) জয়দেব চৌধুরীর কাছে স্মারকলিপি দেন গ্রামবাসী।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নেত্রকোনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তাহেজা বেগমের নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরা গ্রাম পরিদর্শন করে ধর্ষিতা ও শ্লীলতাহানির শিকার হওয়া কিশোরীদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে একাত্মতা পোষণ করেন।
অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য মো. রুহুল আমীন, ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্পাদক মো. খায়রুল ইসলাম, জেলা অটোরিকশা শ্রমিক লীগের সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, ইউপি মেম্বার সিদ্দিকুর রহমান, গণি মিয়া, মঈন উদ্দিনসহ গ্রামবাসীর মতে, মাসুম গ্রামে একের পর এক মেয়েকে এভাবে ধর্ষণ করেছে, যা মানহানি ও মাসুমের হুমকির ভয়ে কেউ প্রকাশ করেনি।
গ্রামবাসী আরো জানান, মাসুম তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) থেকে চাকরিচ্যুত হয়েছে। এ ধরনের ঘৃণ্য অপরাধের জন্য মাসুমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে গ্রামবাসী।