নেত্রকোনায় পিঠা নিয়ে বাহারি আয়োজন

নেত্রকোনায় উদযাপিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব। নানা রকমের পিঠা প্রদর্শন, পিঠা তৈরির প্রতিযোগিতা, পিঠা খাওয়া, আলোচনা, সংগীত ও জাদু পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় উৎসব।
আজ বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী জেলা শহরের মালনী এলাকায় ইন্দ্র মোহন বিদ্যাপীঠে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। সকালে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক মতীন্দ্র সরকার উৎসবের উদ্বোধন করেন। পরে বিদ্যালয় মিলনায়তনে প্রধান শিক্ষক তপন সাহার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য দেন সাংবদিক লাভলু পাল চৌধুরী , এনটিভির জেলা প্রতিনিধি ভজন দাস, বিটিভির জেলা প্রতিনিধি কবি শিমুল মিলকী, পরিবেশবিদ অহিদুর রহমান, শিক্ষক সুস্থির সরকার প্রমুখ।
সভায় অধ্যাপক মতীন্দ্র সরকার বলেন, বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য পিঠা হারিয়ে যেতে বসেছে। গ্রামে নবান্ন উৎসবে পিঠার আয়োজন করা হলেও শহরে তা হারিয়ে যেতে বসেছে। একে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এই পিঠা আমাদের সমাজে একে অপরের সঙ্গে বন্ধনকে আরো দৃঢ় করতে ভূমিকা রাখে।
শহরের নাগড়া এলাকা থেকে পিঠা উৎসবে আসা শান্তা বলেন, জীবনের শত ঝামেলার মধ্যেও উৎসবে এসে আনন্দ পেয়েছি, প্রাণ ফিরে পেয়েছি।
জয়নগর থেকে আসা গৃহবধূ ফারজানা আক্তার বলেন, অনেকদিন পর কিছুটা হৈচৈ করতে পেরেছি। নিজেও পিঠা খেয়েছি, অন্যদেরও পিঠা খাইয়েছি।
প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পোয়া পিঠা বানিয়ে প্রথম হয়েছে শিক্ষার্থী তন্নী আক্তার।
ইন্দ্র মোহন বিদ্যাপীঠের পরিচালক তপন সাহা বলেন, এই পিঠা বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্যের অংশ। আগে নতুন ধান কাটার সময় তো বাড়ি বাড়ি পিঠার গন্ধ পাওয়া যেত। তা ছাড়া সারা বছরই পিঠা খাওয়া হতো। বেড়াতে গেলে সঙ্গে পিঠা নেওয়া হতো। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবসহ প্রতিবেশীদের পিঠা খাওয়ানোর রেওয়াজ ছিল। এখন আর এসব নেই। তাই পিঠাকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই এই আয়োজন।
উৎসবে চিতই, পাটিসাপটা, পোয়া, মালপোয়া, পাঁপড়ি, পুলি, দুধ পুলি, ভাপা পিঠাসহ অর্ধশতাধিক পিঠা প্রদর্শিত হয়। উৎসবে বাসন্তী সাহাসহ অন্যদের কণ্ঠে গান আর জাদুশিল্পী এস এম মুন্নার পরিবেশনা সবাইকে মাতিয়ে রাখে।