ছেলের লাঠির আঘাতে বাবার মৃত্যু, শোকাহত ছেলের আত্মহত্যা

পারিবারিক কলহের জেরে ছেলের বাঁশের লাঠির আঘাতে বাবা অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ছেলে নিজেও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের উদয় নাতুরিয়া গ্রামে।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এই ঘটনা ঘটে এবং রাতে বাবা মারা যান। পরদিন শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ছেলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের শম্ভুচরণ বিশ্বাস (৮০) ও তার মেজ ছেলে বিজয় কুমার বিশ্বাস (৩২)। তিনি পেশায় মাছ বিক্রেতা ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত শম্ভুচরণ বিশ্বাসের ছাগল বিক্রির ৯ হাজার টাকা দিয়ে সম্প্রতি ছেলে বিজয়কুমার পূজার কেনাকাটা করেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে বিজয় ফের বাবার কাছে টাকা চান। এ নিয়ে স্ত্রী মিনতির সঙ্গে বিজয়ের কলহ শুরু হয়। একপর্যায়ে বিজয় স্ত্রীকে বাঁশের লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করলে বৃদ্ধ বাবা শম্ভুচরণ বিশ্বাস ঠেকাতে যান। এ সময় বাবার শরীরে আঘাত লাগলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আহত বাবাকে বাড়িতেই পল্লী চিকিৎসক ডেকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু রাত ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শম্ভুচরণ মারা যান।
পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, বাবার মৃত্যুর শোকে ছেলে বিজয় কুমার শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বাড়ির পাশের একটি বাদাম গাছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। সকালে স্বজনরা তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন।
নিহত শুম্ভুর ছোট ছেলে বিজন কুমার জানান, টাকা নিয়ে কলহ শুরু হয়। স্ত্রীকে মারতে গিয়ে আঘাতটি বাবার গায়ে লাগলে তিনি অসুস্থ হন ও রাতে মারা যান। সেই শোকে ভাই আত্মহত্যা করেছেন। এখানে অন্য কোনো কারণ নেই। তবে বিজয়ের স্ত্রী মিনতি দাবি করেন, শ্বশুর (শুম্ভু) টাকার টেনশনে স্ট্রোক করে মারা গেছেন। আর সেই শোকে তার স্বামী গলায় দড়ি দিয়েছেন।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান জানান, ঝগড়াঝাটির জেরে বাবা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। স্বজনদের দাবি, বাবা স্ট্রোক করে মারা গেছেন এবং ছেলে আত্মহত্যা করেছেন। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য বাবা-ছেলের মরদেহ কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।