আজ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী

গণতন্ত্রের মানসপুত্র ও উপমহাদেশের বরেণ্য রাজনৈতিক নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার।
১৯৬৩ সালের এই দিনে লেবাননের বৈরুতের এক হোটেল কক্ষে নিঃসঙ্গ অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বার্তা সংস্থা বাসস জানিয়েছে, এ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন একাধারে প্রতিভাবান রাজনৈতিক সংগঠক, আইনজ্ঞ, বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভা ও গণপরিষদের সদস্য, অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রীসহ তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
যথাযোগ্য মর্যাদায় অবিসংবাদিত এই নেতার মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আজ শনিবার সকাল আটটায় বাংলাদেশ হাইকোর্ট সংলগ্ন মরহুম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মাজারে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির বানী
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, বিকাশ ও এ অঞ্চলের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অবদান জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।
তাঁকে গণতন্ত্রের মানসপুত্র আখ্যায়িত করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দীর জীবন ও কর্ম আগামী প্রজন্মকে গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা ও জনগণের সার্বিক কল্যাণে উদ্বুদ্ধ করবে।’
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমৃত্যু গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী উপমহাদেশে গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক অনন্য নাম।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তিনি ছিলেন প্রতিভাবান রাজনৈতিক সংগঠক, আইনজ্ঞ, বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভা ও গণপরিষদের সদস্য এবং অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রীসহ তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগ (পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ) প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৪ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের কাছে মুসলিম লীগের শোচনীয় পরাজয়ের পেছনেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।’
রাষ্ট্রপতি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বানী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা ও রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর জীবন ও আদর্শ আমাদেরকে প্রেরণা জোগাবে। তিনি (সোহরাওয়ার্দী) মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি বিকাশে আজীবন কাজ করেছেন।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উপমহাদেশের মুসলমান সমাজের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক স্বার্থরক্ষার সংগ্রামে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন উচ্চকণ্ঠ।’
সোহরাওয়ার্দীর দক্ষ পরিচালনায় গণমানুষের সংগঠন আওয়ামী লীগ আরো বিকশিত হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অর্জিত হয় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এক বিবৃতিতে মরহুম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর পূণ্য স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর নেতৃত্বের অসাধারণ বলিষ্ঠতা, দৃঢ়তা ও গুণাবলি জাতিকে সঠিক পথের দিক-নির্দেশনা দিয়েছে। গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার ও আইন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি অসাধারণ অবদান রেখেছেন।’
এদিকে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকাল আটটায় জাতীয় পার্টির (জেপি) পক্ষ থেকে মরহুমের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।