১০ মামলায় ৫৮ আসামির বিচার চলছে

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের আরো ১০ মামলায় ৫৮ আসামির বিষয়ে বিচারিক কার্যক্রম চলছে।
একটি মামলায় তিন আসামি হবিগঞ্জ জেলার খাগাউড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়া, তাঁর ছোট ভাই বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান ওরফে আঙ্গুর মিয়া ও তাঁদের চাচাতো ভাই আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে গত ২৯ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আগামী ২১ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন ও সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।
মহেশখালীর ব্যবসায়ী সালামত উল্লাহ খানসহ ১৯ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন করেছে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তাঁদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন, ধর্মান্তর ও দেশান্তরকরণের ১৩টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
১৯ আসামি হচ্ছেন সালামত উল্লাহ খান, মৌলভি জকরিয়া শিকদার, মো. রশিদ মিয়া বিএ, অলি আহমদ, জালাল উদ্দিন, মৌলভি নুরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম সাবুল, মমতাজ আহম্মদ, হাবিবুর রহমান, মৌলভি আমজাদ আলী, মৌলভি আব্দুল মজিদ, বাদশা মিয়া, ওসমান গনি, আব্দুল শুক্কুর, মৌলভি সামসুদ্দোহা, মো. জাকারিয়া, মো. জিন্নাহ ওরফে জিন্নাত আলী, মৌলভি জালাল ও আব্দুল আজিজ।
এক মামলায় দুই আসামি কিশোরগঞ্জের নিকলির রাজাকার কমান্ডার সৈয়দ মো. হুসাইন ও মোহাম্মদ মোসলেম প্রধান। তাঁদের বিরুদ্ধে আগামী ১৯ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের দিন ধার্য রয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল খালেক মণ্ডলের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী ৯ ডিসেম্বর তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য রয়েছে।
একটি মামলায় আসামি জামালপুরের আট রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৬ অক্টোবর দিন ধার্য রয়েছে। একই মামলার আট আসামির মধ্যে দুজন অ্যাডভোকেট শামসুল আলম এবং এস এম ইউসুফ আলী কারাগারে আছেন। পলাতক বাকি ছয়জন হলেন মো. আশরাফ হোসেন, অধ্যাপক শরীফ আহমেদ ওরফে শরীফ হোসেন, মো. আব্দুল হান্নান, মো. আব্দুল বারী, মো. হারুন ও মো. আবুল কাসেম।
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মুড়াকরি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পলাতক লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে আগামী ৯ নভেম্বর তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলে দিন ধার্য রয়েছে। গত ৫ মে লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর থেকেই লিয়াকত আত্মগোপনে (পলাতক) রয়েছেন।
একটি মামলায় নোয়াখালী জেলার পাঁচ আসামির আগামী ১৪ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। আসামিরা হলেন জেলার সুধারামের আমির আহম্মেদ ওরফে রাজাকার আমির আলী, আবুল কালাম ওরফে এ কে এম মনসুর, মো. ইউসুফ, মো. জয়নাল আবদিন ও মো. আব্দুল কুদ্দুস।
কিশোরগঞ্জের পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১২ অক্টোবর দিন রয়েছে। একই মামলায় পাঁচ আসামি হচ্ছেন জেলার করিমগঞ্জের দুই সহোদর সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মো. নাসিরউদ্দিন আহমেদ, কিশোরগঞ্জ জেলা বারের আইনজীবী মো. শামসুদ্দিন আহমেদ, গাজী আব্দুল মান্নান, হাফিজ উদ্দিন ও আজহারুল ইসলাম।
একই মামলার আসামি যশোর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির নেতা সাখাওয়াত হোসেনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন যশোরের মো. ইব্রাহিম হোসেন, মো. বিল্লাল হোসেন, মজিবুর রহমান, আব্দুল আজিম সরদার, কাজী ওয়াহেদুল ইসলাম, লুৎফর মোড়ল, আব্দুল খালেক মোড়ল, আকরাম হোসেন, ওজিয়ার মোড়ল, মশিয়ার রহমান ও আজিম সরদার।
পটুয়াখালী জেলার পাঁচজনের বিষয়ে আগামী ১ ডিসেম্বর তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলে দিন ধার্য রয়েছে। আসামিরা হলেন মো. এসহাক সিকদার, মো. সলেমান মৃধা, ছত্তার প্যাদা, গনি হাওলাদার ও আউয়াল মৌলভি।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হকের নেত্বত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এসব মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে। বিচারিক প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দী।