জয়পুরহাটে বাল্যবিবাহ : ১১ জনকে জেল-জরিমানা

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় বাল্যবিবাহ দেওয়ার দায়ে কনের বাবাসহ ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। উপজেলার রুকিন্দিপুর ইউনিয়নের পৃথক গ্রাম থেকে আটকের পর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রুকিন্দিপুরের পূর্ব মাতাপুর গ্রামের কৃষক আবদুর রশিদ গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাঁর মাদ্রাসাপড়ুয়া ১৪ বছর বয়সী মেয়ে রুনা লায়লাকে একই গ্রামের আবদুস ছামাদের ছেলে আরিফুল ইসলামের (৩০) সঙ্গে এক লাখ টাকা দেন মোহরানায় বিয়ে দেন। এর আগে আরিফুলের দুবার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে।
বাল্যবিবাহের এ খবর জানতে পেরে পুলিশ গত বুধবার সন্ধ্যায় ওই গ্রাম থেকে বর আরিফুল ইসলাম, কনের বাবা আবদুর রশিদ, বিয়ের সাক্ষী শামীম এবং রাতে রুকিন্দিপুর গ্রাম থেকে বিয়ের রেজিস্ট্রার (কাজী) এনামুল হক ও নলডাঙ্গা গ্রাম থেকে সহকারী রেজিস্ট্রার (কাজী) ইদ্রিস আলীকে আটক করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব মাতাপুর গ্রামে দ্বিতীয় দফা অভিযান চালিয়ে পুলিশ কনের উকিল বাবা সবুজ, বিয়ের সাক্ষী আবদুল মুমিন ও নুরুন নবী, বিয়ে পড়ানো মাওলানা স্থানীয় মসজিদের ইমাম আবদুল গাফফার এবং এই বাল্যবিবাহে দুই মদদদাতা রিকো ও মিজানকে আটক করে।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম জানান, আটক ব্যক্তিদের গতকাল দুপুরে আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম মো. শাহনেওয়াজের কাছে হাজির করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তিনি মেয়ের বাবা, বর, সহকারী কাজি ও দুই সাক্ষীকে এক মাস করে এবং বিয়েতে মদদদানকারী দুজনকে দুই মাসের কারাদণ্ডাদেশ ও বাকি চারজনকে এক হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। বিকেলে দণ্ডিতদের জয়পুরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কনে সাংবাদিকদের জানায়, স্থানীয় দুই যুবকের দেখানো ভয়ভীতিতে তার বাবা ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে আরিফুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন। আরিফুলের এটি তৃতীয় বিয়ে। সবার সহায়তা পেলে সে আবারো পড়াশোনা করতে চায়।