মাদারীপুরে অনলাইনভিত্তিক ‘ব্লু হোয়েল’ গেমে আসক্ত দাবি করা এক কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে তার পরিবার। গতকাল সোমবার রাতে রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের ইউএস মডেল হাসপাতালে ওই কিশোরকে ভর্তি করা হয়।

ওই কিশোরের বাড়ি রাজৈর উপজেলায়। সে কেজিএস পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তবে তার পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি পরিবারের সদস্যরা।

মানসিকভাবে ভেঙে পড়া ওই কিশোরকে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি কাউন্সেলিং (পরামশ সেবা) দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইউএস মডেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ব্লু হোয়েল গেম খেলে নিজের হাত কেটেছে বলে দাবি ওই কিশোরের। সে বলে, ‘গেম খেলতে খেলতে পাঁচে (ধাপ) যখন গেলাম, তখন একটা টোন আইছে, খুব খারাপ টোন। ওই টোন শুনলে মনে করেন মাথামুথা ঘোরে। আর যখন যা লেখা আবে, ওই গেমের ভিতরে মেসেজ পাঠাবে তহনই তা আমার করতে হবে। না করলে মনে করেন ঠিক থাকতে পারব না। তহন অনুভূতি মনে করেন মাথামুথা ছিইড়া যায়। এইরকম একটা অনুভূতি থাহে। দাঁড়ায়ে থাকতে পারমু না। এই ওই ভাইঙ্গা ভুইঙ্গা ফালাই দিমু, যদি না খেলতে পারি তহন। তখন মনে হয় এই গেমডা খেললাম ক্যান? এখন সুইসাইড করি। তাহলে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।’

মাদারীপুরের এই কিশোরের দাবি ব্লু হোয়েল গেমের নিয়ম অনুযায়ীই হাতে এই মাছটি এঁকেছে সে। ছবি : এনটিভি

কিশোরের চাচা জানান, কিছুদিন ধরেই তাঁরা বুঝতে পারছিলেন যে সে কোনো একটি গেমে আসক্ত হয়ে পড়ছিল। একদিন কিশোরের হাতে রক্ত দেখতে পান। সে হাত কেটে একটি ‘তিমি মাছ’ এঁকেছিল। পরে সে জানায়, একটি গেম খেলছে যেখানে নির্দেশ অনুযায়ী হাত কাটতে হয়। অন্যদের কাছে গেমটির সম্পর্কে জানতে পেরে তিনি ওই কিশোরের মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলেন। এরপর অসুস্থ হয়ে যায় ওই কিশোর। পরে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসেন বলে জানান তিনি।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক জানান, ব্লু হোয়েল গেমে আসক্ত কিশোরের হাসপাতালে ভর্তির খবর জানতে পেরে তাঁরা সেখানে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছেন। চিকিৎসার পর সে এখন সুস্থ আছে বলে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে।

এই গেমে আসক্ত হয়ে কেউ যেন বিপথগামী না হয় সেজন্য পুলিশ নজরদারি করছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।