নেত্রকোনায় ফের বন্যার শঙ্কা, ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়িঢলে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্যার রেশ না কাটতেই আবার তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। বন্যায় উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ফসলি জমি ও বসতবাড়ি প্লাবিত হয়েছে।
পূর্বধলা উপজেলার শ্যামগঞ্জ এলাকার রেললাইনে পানি উঠেছে। সেই রেলপথ দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলছে ট্রেন।
আজ রোববার দুপুর থেকে দুর্গাপুরের বিরিশিরি পয়েন্টে সুমেশ্বরী নদীর পানি নামতে শুরু করেছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুর্গাপুরের গাঁওকান্দিয়া, কুল্লাগড়া ও কাকৈরগড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষ গবাদি পশু নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। গো-খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে এসব এলাকায়। পানি বাড়ায় দুর্গাপুরে দ্বিতীয়বারের মতো বন্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। হুমকির মুখে পড়ছে রোপা আমন ফসল। কংশ ও সোমেশ্বরী নদীর পানির বৃদ্ধির কারণে চিনাগুরি বিল ও চিতলি বিলসহ নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মতিন মোতালেব ও কুল্লাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত আরেং বলেন, পরপর বন্যা হওয়ায় এবার রাস্তাঘাট ও জমির ফসল রক্ষা করা যাচ্ছে না। শীত মৌসুমে কৃষকরা তাদের ফসল গোলায় তুলতে পারবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি বন্যায় উপজেলার প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দুর্গাপুর এলাকার দায়িত্বে থাকা গ্যাট রিডার নাঈম খান জানান, দুর্গাপুরের বিরিশিরি পয়েন্টে সুমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আজ দুপুর থেকে সেই পানি নামতে শুরু করেছে। অপর দিকে আত্রাখালী, কংশ, মগড়া ও নেতাই নদীর পানি বেড়ে চলেছে।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামনুর রশীদ বলেন, নদীর পানি বেড়েছে, তবে তা এখনো ক্ষয়ক্ষতির পর্যায়ে যায়নি। ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টি কমলে আমাদের এখানে পানি কমে যাবে, বন্যার আশঙ্কা থাকবে না। এরপরও যেকোনো পরিস্থিতি হোক না কেন, তা মোকাবিলায় প্রশাসনের প্রস্তুতি রয়েছে।
এদিকে অতিবৃষ্টিতে জেলার পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ এলাকায় পানিতে তলিয়ে গেছে রেললাইনসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। এ পথে ঝুঁকি নিয়েই চলছে ট্রেন। এ ছাড়া প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনা সদরের মগড়া নদীসহ আত্রাখালী, কংশ ও নেতাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কলমাকান্দা ও বারহাট্টা উপজেলায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।