বাদশার দাম চার লাখ ৬০ হাজার

বাদশার জন্ম ভারতে। দুই বছর বয়সে বিক্রি হয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসে বাদশা। দুই বছর ধরে বাদশা নাটোরের ইদ্রিস আলীর কাছে। সবাই ডাকত ‘ইন্ডিয়ান গরু’ বলে। ইদ্রিস আলী তার নাম রাখেন বাদশা। বলে দেন ডাকতে হবে বাদশা নামেই।
নিজের গরু বাদশাকে রাজধানীর কমলাপুর হাটে নিয়ে এসেছেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ইদ্রিস আলী। দাম চাইছেন চার লাখ ৬০ হাজার টাকা।
বাদশার মাথায় মুকুট নেই তবে আছে বিশাল দুই শিং। দুই শিঙে লাগানো আছে রং। বাদশার বয়স এখন চার বছর। একটু বেশি দামে বিক্রির আশায় ইদ্রিস আলী বাদশাকে নিয়ে এসেছেন রাজধানীর কমলাপুর পশুর হাটে।
মো. ইদ্রিস আলী এনটিভি অনলাইনকে জানান, গ্রামের বাড়িতে সামান্য ফসলি জমি আছে তাঁর। সেই জমিতে ধান ও সবজি চাষ করেই তাঁর সংসার চলে। একটু বাড়তি উপার্জনের আশায় তাই বাড়িতে কিছু ছাগল ও কয়েকটি গরু লালন পালন করেন তিনি। সে কারণে দেশি ও বিদেশি ছোট বাছুর গরু বাজার থেকে অল্প দামে কিনে দুই তিন বছর ধরে লালন পালন করে তা বাজারে বিক্রি করেন তিনি।
‘বাদশা’কে প্রায় দুই বছর আগে রাজশাহী থেকে কিনেছেন ইদ্রিস মিয়া।
সিটি করপোরেশনের ইজারা অনুযায়ী আজ ৩০ আগস্ট থেকেই হাট বসার কথা ছিল। তবে দুই তিনদিন আগেই গরু, ছাগল নিয়ে এই হাটে এসেছেন অনেক ব্যবসায়ী। বুধবার হাটে গিয়ে দেখা যায় প্রায় কয়েক হাজার গরুর উঠেছে হাটে, কিন্তু তুলনামূলক ক্রেতা নেই। অনেক ব্যবসায়ীকে হাটের মধ্যে গরু বেঁধে রেখে অলস সময় পার করতে দেখা গেছে।
কুষ্টিয়া থেকে ২১টি গরু নিয়ে এসেছেন এরশাদ আলী নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি এনটিভি অনলাইনকে জানান, গতকাল মঙ্গলবার তিনি গরুগুলো নিয়ে এসেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাঁর একটা গরুও বিক্রি হয়নি।তবে আশা করছেন আগামীকাল আর ঈদের আগের দিন তাঁর সব গরু বিক্রি হয়ে যাবে।
বগুড়ার কাহালু এলাকার গরু ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন নয়টি গরু নিয়ে এসেছেন গত রোববার। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ক্রেতারা এখন শুধু গরুর দাম দেখতেই হাটে এসেছে। যারা গরুর দাম জানতে চায়, তারা দাম শুনেই চলে যায়। আবার অনেকে না কেনার মতো অল্প দাম বলে।’
হাসিবুর রহমান পেশায় একজন সরকারি কর্মচারী। রামপুরা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা। আফতাব নগরে তাঁর নিজের এলাকাতেই বসেছে গরুর বিশাল হাট। তবে একটু দাম যাচাই করার জন্য এসেছেন কমলাপুর পশুর হাটে।
হাসিবুর এনটিভি অনলাইনকে জানান, আফতাব নগরের গরুর হাট থেকেই প্রতি বছর গরু কিনেন তিনি। তবে আজ বিকেলে হাতে একটু বাড়তি সময় পাওয়াতে হঠাৎ মনে হয়েছে কমলাপুর হাট ঘুরে গরুর দাম যাচাই করার। যদি আফতাব নগরেরর চেয়ে এখানে দাম একটু কম মনে হয়, তবে এখান থেকেই গরু কিনবেন তিনি।
হাটের হাসিল ঘরের দায়িত্বে থাকা মো. মামুন হোসাইন নামের এক ব্যক্তির কাছে কেনাবেচা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিকাল ৪টা পর্যন্ত তাঁর হাসিল ঘরে একটি মাত্র গরুর চালান করা হয়েছে। গরুটি বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়। আর হাসিল নেওয়া হয়েছে ছয় হাজার ৭৫০ টাকা।’