হারুনার রশিদ মুন্নুর জানাজা কাল

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হারুনার রশিদ খান মুন্নুর জানাজা আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর মরদেহ বিএনপির কার্যালয়ে আনা হবে সকাল ৯টায়। সেখানে এক ঘণ্টা রাখা হবে তাঁকে শেষবারের মতো দেখার জন্য।
হারুনার রশিদ খানের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বেরা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। বেলা ১২টায় তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে ধামরাই উপজেলার ইসলামপুরে মুন্নু সিরামিকস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রাঙ্গণে। চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বেলা দেড়টায় তাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকা মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার সৈয়দ কালু শাহ কলেজ মাঠে। মরহুমের পঞ্চম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বেলা আড়াইটায় মানিকগঞ্জ জেলা শহরের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ মাঠে। তাঁর ষষ্ঠ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বিকেল সাড়ে ৩টায় মরহুমের নিজগ্রাম হরিরামপুর উপজেলার পাটগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। সপ্তম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে মুন্নু মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে, বিকেল সাড়ে ৪টায়। সর্বস্তরের মানুষের শেষবারের শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে মরহুমের মরদেহ এক ঘণ্টা রাখার পর বিকেল সাড়ে ৫টায় তাঁকে সমাহিত করা হবে মুন্নু সিটিতে অবস্থিত তাঁর পারিবারিক কবরস্থানে।
মুন্নু গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান, সাবেক সাংসদ ও মন্ত্রী হারুনার রশিদ খান মুন্নু বার্ধক্যজনিত কারণে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টায় মানিকগঞ্জের গিলন্ড মুন্নু সিটির নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তিনি স্ত্রী হুরুন নাহার, দুই মেয়ে আফরোজা খান রিতা ও ফিরোজা মাহমুদ পারভীনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
হারুনার রশিদ খানের মৃত্যুতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মহীউদ্দিন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম খান শান্ত, মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
প্রয়াত হারুনার রশিদ খান মুন্নু বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে মানিকগঞ্জ-২ আসন এবং ২০০১ সালে মানিকগঞ্জ-২ ও মানিকগঞ্জ-৩ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে তিনবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে দুটি আসনে জয়লাভ করেন। তখন তিনি বিএনপি সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
হারুনার রশিদের বড় মেয়ে আফরোজা খান রিতা লন্ডনে থাকায় তাঁর মরদেহটি হিমাগারে রাখা হয়। আজ বুধবার ভোরে তিনি লন্ডন থেকে দেশে ফিরলে হারুনার রশিদের জানাজা ও দাফনের সময়সূচি ঘোষণা করা হয়।
এদিকে বিএনপির এই নেতার মৃত্যুতে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তিন দিনের (মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার) শোক পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দিবসগুলিতে জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন শাখা দলীয় কার্যালয়ে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ এবং জেলা শহরের দলীয় কার্যালয়ে শোক বইতে স্বাক্ষর কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী শুক্রবার জুমার নামাজের পর জেলায় মসজিদগুলোতে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
বিশিষ্ট শিল্পপতি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হারুনার রশিদ খান মুন্নু ১৯৩৩ সালের ১৭ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫২ সালে মানিকগঞ্জ মডেল হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, জগন্নাথ কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক (পাস) এবং পরবর্তী সময়ে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট (সিএ) কোর্স সম্পন্ন করেন।