কঠোর হাতে দুর্নীতি দমনে ডিসিদের তাগিদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন এবং এসব ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি কঠোর হাতে দমনের জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে জনগণের সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করারও আহ্বান জানান তিনি।
আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শুরু হওয়া তিনদিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন, মাদকের বিস্তার রোধ, কর্মসংস্থান তৈরি, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নসহ সরকারের বেশ কিছু নির্দেশনা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকার জনগণের জীবনমান উন্নয়নে অ্যাডহক ভিত্তিতে নয়, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এক লক্ষ ৫৩ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট দিয়েছি। আমরা শুধু এইটুকুই চাই যে, এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলি যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়। যাতে করে দেশের উন্নয়নটাও দ্রুত হতে পারে। করাপশন (দুর্নীতি) দূর করতে হবে জীবন থেকে। কারণ কোনো কাজ করতে গেলে সেখানে যদি করাপশন হয় আর সেটুকুও যদি খেয়ে ফেলে তাহলে তো আমার উন্নয়নের ছটা গ্রামবাংলায় বা কোথাও লাগবে না। কাজেই এ ব্যাপারে আপনাদের জনসচেতনতাও সৃষ্টি করতে হবে এবং নিজেদেরকেও এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে।’চলতি বছর অতিবৃষ্টিসহ নদীভাঙনে যারা গৃহহারা হয়ে পড়েছে, তারা ছাড়াও গৃহহীনদের তালিকা করে তাদের জন্য বাড়ি নির্মাণের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।
জনগণের চাহিদার কথা শুনে সে মোতাবেক সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি সেবা গ্রহণে সাধারণ মানুষ যাতে কোনোভাবে হয়রানি বা বঞ্চনার শিকার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তাঁদের সাথে কথা বলে তাঁদের সমস্যাগুলি কী সেই সমস্যাগুলি জানা এবং তাঁদের সমস্যাগুলি সমাধান করার উপায় সেটাও সুনির্দিষ্ট করে বলে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে জেলা পর্যায়ে আপনারাই হচ্ছেন আমাদের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি, কেন্দ্রের প্রতিনিধি। তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনপ্রিতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে হবে।’
সরকারের অগ্রাধিকার বিবেচনা করে গ্রামের উন্নয়নে কাজ করার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। যাতে মানুষের শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা কমে।
অনুষ্ঠানে দেশের সকল জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার ছাড়াও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যোগ দেন। মাঠ প্রশাসনের এই কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের কিছু দাবি তুলে ধরেন।
নিজের বক্তব্যে এক জেলা প্রশাসক বলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা হাইকোর্ট বিভাগের অবৈধ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষ মনে করে যে এই আইন অকার্যকর হয়ে পড়লে চরম জনদুর্ভোগ ও জননিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প জনগণের মধ্যে তুলে ধরতে জেলা প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসকরা।