‘এএসপি হত্যায় চার ছিনতাইকারী, একজন গ্রেপ্তার’

হাইওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মিজানুর রহমানকে ছিনতাইকারীরা শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
আজ রোববার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বলেন মনিরুল।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা গতকাল শনিবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে এএসপি মিজানুর হত্যায় জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর নাম মো. শাহ আলম ওরফে আলম ওরফে বুড্ডা।
মনিরুল বলেন, ‘আমাদের তদন্তের প্রাপ্ততথ্য ও গ্রেপ্তার হওয়া শাহ আলমকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য মিলে যায়। তাতে জানা যায়, ঈদের আগে রাস্তায় গাড়ির অনেক চাপ থাকায় হাইওয়ে পুলিশের এএসপি মিজান তাঁর কর্মস্থল সাভারের উদ্দেশে বাসা থেকে ভোরে রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু চারজন ছিনতাইকারী যাত্রীবেশে তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে।
শাহ আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান বলেন, সহযোগী মিন্টু, কামাল ও ফারুক মিলে গত ২১ জুন ফজরের আজানের পর উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের মসজিদের পাশে ছিল। এ সময় এএসপি মিজানুর রহমান তাদের সামনে এলে তারা তাঁকে যাত্রী সেজে ডেকে তাদের প্রাইভেটকারে ওঠায়। এএসপি মিজানুর রহমানকে গাড়িতে ওঠানোর পরই চালক জোরে গাড়িতে গান বাজিয়ে, লাইট বন্ধ করে দ্রুত গাড়ি চালিয়ে জসীম উদ্দিন রোড হয়ে প্রথমে হাউস বিল্ডিং, পরে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের দিকে যায়। একপর্যায়ে গাড়ির পেছনের আসনে বসা মিন্টু প্রথমে মিজানুর রহমানের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এ সময় দ্রুত তাদের মধ্যে একজন এএসপি মিজানকে প্রাইভেটকারে থাকা ঝুট কাপড় গলায় প্যাঁচ দিয়ে ধরে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, কিছুক্ষণ পর এএসপি মিজানের কোনো সাড়া-শব্দ পাওয়া যায় না। আসামিরা টহল পুলিশের ভয়ে মূল সড়ক ব্যবহার না করে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর থেকে গলিপথ ধরে বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছায়। বিরুলিয়া ব্রিজের আগেই রাস্তার বাম পাশে ঘন গাছপালা দেখে জাকির গাড়ি থামায়। মিন্টু, কামাল ও ফারুক দ্রুত এএসপি মিজানকে মৃত অবস্থায় গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তার বাম পাশে রেখে সবাই গাড়িতে উঠে চলে যায়।
মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, এই ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা সাধারণত একজন যাত্রীকে লক্ষ্য করে তাকে গাড়ি উঠিয়ে নেয়। এরপর গাড়ির ভেতরে বসার পর তাকে মাঝখানের আসনে বসায় এবং দুই পাশ দিয়ে দুজন চেপে ধরে হত্যা করে। এ ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটিই হয়েছে। সাধারণত তারা পুলিশ ও সাংবাদিক পেলে তাঁদের ছেড়ে দিলে বিপদ হতে পারে ভেবে হত্যা করে। মূলত এ কারণেই এএসপি মিজানকে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধে তারা হত্যা করে।
এর আগে গত ২১ জুন রাজধানীর রূপনগর এলাকায় বিরুলিয়া সেতুর কাছ থেকে হাইওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মিজানুর রহমানের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল।