নেত্রকোনায় এসআইর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

অভিযোগ নেই অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রসহ চারজনকে থানায় নিয়ে পিটিয়েছে পুলিশ। এমনই অভিযোগ এনে নেত্রকোনা মডেল থানা উপপরিদর্শক (এসআই) মহসিন মোস্তফার বিরুদ্ধে নেত্রকোনা অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জেলা শহরের কাটলী গ্রামের আবদুল্লাহ খান মিতুল (২৩) বাদী হয়ে আজ সোমবার মামলাটি দায়ের করেন। আবদুল্লাহ খান মিতুল রাজধানীর স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র।
আদালত মামলার অভিযোগটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, গত ১১ জুলাই বেলা ২টার দিকে আবদুল্লাহ খান মিতুল ও তাঁর কয়েক বন্ধু জেলা শহরের শাহ সুলতান রোডে নেত্রকোনা সদর উপজেলা পরিষদের পাশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে আলাপ করছিলেন। এ সময় নেত্রকোনা মডেল থানার এসআই মহসিন মোস্তফা আরো কয়েকজন পুলিশ নিয়ে এসে হঠাৎ তাঁদের ঘেরাও দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন ও একপর্যায়ে লাঠি দিয়ে পেটাতে আরম্ভ করেন। পুলিশ মিতুল, নেত্রকোনা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র অমিও এবং নেত্রকোনা আবু আব্বাস কলেজের রিমি কায়সার আনোয়ার ও আরিফ নামে অপর দুজনকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। পরে থানা হেফাজতে নিয়ে মিতুল ও অমিওর কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হবে বলে হুমকি দেন এসআই মোস্তফা মহসিন। এতে রাজি না হওয়ায় এসআই মহসিন মোস্তফা তাঁদের বেধড়ক পেটান। এতে তাঁরা পিঠে, বুকে, ঘাড়ে, পায়ের উরু ও হাঁটুতে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে কোনো ধরনের মামলা না থাকায় রাত ১০টার দিকে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। মুক্ত হওয়ার পর তাঁরা নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন।
জেলা শহরের কাটলী এলাকার বাসিন্দা অমির বাবা হাবিবুর রহমান খান রতন বলেন, এসআই মহসিন মাদকসেবী ও তিনি অপরাধীদের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে থাকেন। এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে তিনি অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে নিরপরাধ মানুষের ওপর নির্যাতন করেন।
এ ব্যাপারে এসআই মহসিন মোস্তফা বলেন, ‘আমি কোনো ছাত্রকে মারধর করিনি। মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে মামলা ও অভিযোগের বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবেন।’
নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) আবু তাহের দেওয়ান বলেন, ‘আমি মামলার বিষয়ে এখনো কিছুই জানি না।’
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বলেন, ‘ছাত্রদের মারপিটের বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে শুনেছি। এ ব্যাপারে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেউ অভিযোগ দেয়নি। মামলার বিষয়টি আমি এখনো অবগত হয়নি।’ মহসিন মোস্তফাকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ডিবিতে বদলি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে বাদীর আইনজীবী মানবেন্দ্র বিশ্বাস উজ্জ্বল জানান, আদালত মামলার অভিযোগটি আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।