নেত্রকোনায় টর্নেডো, ত্রাণের জন্য হাহাকার

নেত্রকোনার আটপাড়া ও মদন উপজেলায় গতকাল শনিবার দুপুরে টর্নেডোর আঘাতে ১১টি গ্রামের ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও অনেক পরিবার এখনো খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। প্রয়োজনীয় সরকারি ত্রাণ সহায়তা না পৌঁছায় অনেক পরিবার অর্ধাহারে অনাহারে দিন পার করছে।
গতকাল বেলা সোয়া ২টার দিকে টর্নেডো আঘাত হানে। এতে মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের কদমশ্রী গ্রাম এবং আটপাড়া উপজেলার তেলীগাতি ইউনিয়নের গন্ধর্ভপুর, তেলীগাতী, বিজয়পুর, বড়তলী, শাসনকান্দি, কামারগাতি, পূর্ব হাতিয়র, পশ্চিম হাতিয়র, ইকরাটিয়া গ্রাম ও তেলীগাতি বাজারের ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকানপাট ও স্থাপনা বিধ্বস্ত হয়। উপড়ে পড়ে শতাধিক গাছপালা।
পূর্ব হাতিয়র গ্রামের সবুজ মিয়া ও তাঁর ভাই রফিক মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁরা ঘরবাড়ি হারিয়ে সরকারি আর্থিক সহায়তার আশায় খোলা আকাশের নিচে পরিবার-পরিজন বসে রয়েছেন।
সবুজ মিয়ার স্ত্রী বলেন, ‘ঝড় আমার সবকিছু কাইড়া নিল, ক্ষয়ক্ষতি দেখতে এই পর্যন্ত সরকারি ও রাজনৈতিক দলের কেউ আসে নাই। কেউ আমাদের কিছুই দেয় নাই।’
কামারগাতি গ্রামের শেখ কামাল বলেন, ‘ঝড়ে আমার বাড়ির চারটি টিনের ঘর ভেঙে গেছে। সন্তানদের নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নিচে বসে আছি।’
আজ রোববার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে আসেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন আসেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ইফতেখার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সংসদ সদস্য বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের সরকার। এ সরকারের আমলে বন্যা দুর্গত এলাকায় কেউ না খেয়ে থাকেনি, দুর্গত এলাকায়ও কোনো লোক না খেয়ে থাকবে না। ঝড়ে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, তাঁদের ঘরবাড়ি নির্মাণে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মেরামত করে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক ড. মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার লোকজনের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য এরই মধ্যে ১০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।