দিনমজুরি শেষে শিশুকে অপহরণ, ৩ দিন পর মায়ের কোলে

মানিকগঞ্জ থেকে অপহৃত হওয়ার তিনদিন পর সিরাজগঞ্জ থেকে এক শিশুকে উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এই ঘটনায় অপহরণ চক্রের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সাকইদিঘী গ্রামের মোয়াজ্জেম ওরফে নুরুল ইসলাম (৩৩) ও তাড়াশ গ্রামের রাশেদুল ইসলাম (৩২)। তাঁরা দুজন পরস্পরের আত্মীয়। তাঁরা বিভিন্ন সময়ে মানিকগঞ্জে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছিলেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান এই তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, গ্রেপ্তার হওয়া মোয়াজ্জেম গত ২ মে থেকে জেলার হরিরামপুর উপজেলার ইজদিয়া গ্রামের আসলাম শেখের বাড়িতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। ৬ মে শনিবার সকালে মোয়াজ্জেমকে তাঁর চারদিনের পারিশ্রমিক বুঝিয়ে দিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যান আসলাম শেখ এবং তাঁদের একমাত্র ছেলে শেখ বাঁধন স্কুলে চলে যায়। এ সময় মোয়াজ্জেম ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে বাসা ত্যাগ করেন। ঢাকায় যাওয়ার কথা বললেও মোয়াজ্জেম ওত পেতে থাকেন বাঁধনের স্কুল ছুটির অপেক্ষায়। বেলা ১১টায় স্কুল ছুটি হলে মোয়াজ্জেম বাঁধনকে ফুসলিয়ে তাঁর নিজ জেলা সিরাজগঞ্জে নিয়ে যান এবং আসলাম শেখের কাছে মোবাইলে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ খবর শুনে আসলাম শেখ বাড়িতে ও আশাপাশে কোথাও না পেয়ে অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত হন।
আসলাম শেখ বিষয়টি হরিরামপুর থানায় অবগত করলে হরিরামপুর থানা বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানান। পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান কালক্ষেপণ না করে মামলা রুজু করার আগেই গোয়েন্দা পুলিশকে অপহরণের শিকার বাঁধনকে উদ্ধারের দায়িত্ব দেন। ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ভিক্টর ব্যানার্জির নেতৃত্বে একটি দল তাৎক্ষণিক মোয়াজ্জেমের মুঠোফোন ট্যাকিং করে টানা তিনদিন সিরাজগঞ্জে অবস্থান করেন। পরে তাড়াশ থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান করে গতকাল সোমবার বিকেলে খালখালা বাজার থেকে অপহৃত বাঁধনকে উদ্ধার করে। এ সময় অপহরণকারী চক্রের মূল হোতা মোয়াজ্জেম ওরফে নূরুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগী রাশেদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন ও আবদুল আউয়াল, ডিএসবির সহকারী পুলিশ সুপার হামিদুর রহমান সিদ্দিকীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অপহরণকারীদের কবল থেকে উদ্ধার হওয়া বাঁধনের বাবা-মা কান্নায় ভেঙে পড়েন। আবেগ আপ্লুত বাঁধনের বাবা আসলাম শেখ পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।