‘কোর্টে লোক নাই, আমরা না খাইয়া থাকুম’

পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে ঢাকার নিম্ন আদালতপাড়ায়ও। আজ বুধবার সকাল থেকে আদালতপাড়ায় কমসংখ্যক আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীকে দেখা গেছে।
আদালতে বাদী ও বিচারপ্রার্থী না থাকায় আইনজীবীরা সময়ের আবেদন করছেন। আর এতে করে গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিচারকাজেও বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে আরফান উদ্দিন নামের এক বিচারপ্রার্থী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আদালতে আমার একটি চেকের মামলা ছিল। সকাল ৯টায় আদালতে আসার কথা। কিন্তু গাড়ি না চলায় সাভার থেকে আসতে অনেক বেগ পোহাতে হয়েছে।’
‘১০০ টাকার গাড়ি ভাড়ার রাস্তায় ৭০০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। এভাবে পরিবহন ধর্মঘট চলতে থাকলে মানুষের আর ভোগান্তির শেষ থাকবে না।’
আরফান আদালতের রায় মেনে নিতে বাসচালকদের অনুরোধ করেছেন।
ঢাকার নিম্ন আদালতের আইনজীবী মাহফুজ আলম বলেন, ‘অন্যদিনের তুলনায় আজ আদালতে লোকজন একেবারেই কম। আমার কয়েকজন মক্কেল গাড়ি না পেয়ে আদালতে আসতে পারেননি। তাঁদের খুব গুরুত্বপূর্ণ মামলা ছিল। আদালতে তাঁরা না আসতে পারায় সময়ের আবেদন করা হয়েছে। আমিও আদালতে এসেছি অনেক কষ্ট করে। অতিবিলম্বে এ ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আদালতের রায় মেনে নেওয়া উচিত।’
আদালতপাড়ার চা দোকানদার আলিম মিয়া বলেন, ‘আইজকা কাস্টমার একেবারে কম। কোর্টে লোক নাই। বুধবারের দিন লোকজনে আদালতে ভরপুর থাকে। আমরা না খাইয়া থাকুম আজ।’
এদিকে ঢাকার সিএমএম আদালত, জেলা জজ আদালত, মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতসহ একাধিক আদালতে লোকজনের কম উপস্থিতি দেখা গেছে।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার মামলায় চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন শ্রমিকরা।
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মানিকগঞ্জের জোকা এলাকায় বিপরীতগামী যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় একটি মাইক্রোবাসের। এতে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে।