‘জটিল অপারেশন করালাম, অথচ রোগীর স্বজনদের কাছে আহত হলাম’

‘যে রোগীটা সকালে রিসিভ করলাম। তার জটিল অপারেশন করালাম। কিন্তু তাদের স্বজনদের কাছেই আহত হলাম। ওই রোগীর স্বজনরা বলেছে- আমরা ওৎ পেতে থাকলাম তোদেরকে খুঁজে খুন করব।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক (ইন্টার্ন) ফারহানা আফরিন এভাবেই বলছিলেন। গতকাল শনিবার ঘটা ঘটায় মুষড়ে পড়েছেন তিনি। আজ রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ফারহানা আফরিন। এ সময় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। একইসঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরাও।
ফারহানার ওপর ঘটা হামলার প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাকও দিয়েছেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা।
ফারহানার ওপর ঘটা ঘটনার ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে জানান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘গতকাল শনিবার রাতে ২০৫ নম্বর ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রাউন্ড দিতে যান। তখন এক নম্বর বেডের পাশে অনেক দর্শনার্থীদের দেখতে পান। এতে অনেক দর্শনার্থী রোগীর জন্য ক্ষতিকর এবং ভদ্রভাবে তাদেরকে বের হতে বলা হয়। কিছু উশৃঙ্খল দর্শনাথী জোরপূর্বক ওয়ার্ডে অবস্থান করে। তারা শিক্ষানবিশ চিকিৎসক ফারহানাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় এবং দরজার কাঁচ ভেঙ্গে তাঁকে আঘাত করে। এতে ফারহানার ডান হাতের তালু কেটে যায়।
মিজানুর রহমান আরো বলেন, ‘শিক্ষানবিশ চিকিৎসক আহত হওয়ার ঘটনায় অন্য চিকিৎসকরা এসে আহত ওই চিকিৎসককে জরুরি বিভাগে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।’
সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দাবি করেন ফারহানা আফরিন। এ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও চেয়েছেন তিনি। হামলাকারীদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আটকের দাবি জানান ফারহানা। একই সঙ্গে হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষায় শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের চার দফা দাবি তুলে ধরেন।
এদিকে ওই ঘটনায় অধ্যাপক তপন কুমার সাহা প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান। এ ঘটনায় এরইমধ্যে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।