বাবার দাফনে যাওয়ার পথে মেয়েসহ শ্রমিকের প্রাণ গেল

পক্ষাঘাতগ্রস্ত বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে দাফন করতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল মেয়েসহ এক নির্মাণশ্রমিকের। শনিবার সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নবীনগর এলাকায় এই দুর্ঘটনার শিকার হন তাঁরা।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ভাঙাবাড়ি এলাকার আজাহার শেখের ছেলে মো. আজাদ হোসেন (২৮) ও আজাদের মেয়েশিশু মরিয়ম আক্তার (৪)। এ দুর্ঘটনায় আজাদের স্ত্রী আরজু আক্তার (২২) গুরুতর আহত হলে তাঁকে ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়েছে।
আজাদের চাচা ফজলু শেখ জানান, আজহার প্রায় আট বছর ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত। তাঁর আট ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে আজাদ মেজো। আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকায় নির্মাণশ্রমিকের কাজ করে বাবার চিকিৎসার খরচ ও সংসার চালান তিনি। এ কারণে মেয়ে মরিয়ম ও স্ত্রী আরজুসহ ওই এলাকায় বাসা নিয়ে থাকেন। কিছু দিন আগে আরজুও পোশাক তৈরি কারখানায় শ্রমিকের কাজ নেন। এরই মধ্যে আজ শনিবার সকাল ৭টার দিকে আজাহার ভাঙাবাড়ি এলাকার নিজ বাড়িতে মারা যান। এ খবর পেয়ে স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে বাসা থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন আজাদ।
পুলিশ ও স্বজনরা জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হন তাঁরা। নবীনগর বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশায় ওঠেন। বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি গিয়ে রিকশাচালক মাটি বহনকারী একটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা লাগান। এতে আজাদ ও তাঁর স্ত্রী-মেয়ে রিকশা থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যান। এতে ঘটনাস্থলেই মেয়ে মরিয়ম মারা যায়। আর গুরুতর আহত হন আজাদ ও তাঁর স্ত্রী। তাঁদের পাশের হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আজাদকে মৃত ঘোষণা করেন।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির সাংবাদিকদের জানান, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে, দুপুরে নিহতদের লাশ শিবালয় উপজেলার ভাঙাবাড়ি গ্রামের বাড়ি নেওয়া হয়। একই দিনে একটি পরিবারে তিনজনের মৃত্যুতে পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। বিকেলে তাঁদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় বলে জানান স্বজনরা।