সরকারের সহযোগিতা পেলে একমাসের মধ্যে কিট দেওয়া সম্ভব

সরকারের সহযোগিতা পেলে একমাসের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্তে কোভিড-১৯ রোগ পরীক্ষার সহজ ও স্বল্পমূল্যের কিট সাধারণ জনগণের মধ্যে পৌঁছনো সম্ভব বলে জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে আলাপকালে জাফরুল্লাহ এসব কথা বলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের কিট তৈরি করতে প্রয়োজনীয় রি-অ্যাজেন্ট (কাঁচামাল) বিদেশ থেকে আনতে হবে। সেগুলো আনতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। মালগুলো আসার সঙ্গে সঙ্গে বন্দর থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে খালাস দিয়ে দিতে হবে। এরপর আমাকে কর ফ্রি (ট্যাক্স ফ্রি) করে দেওয়ার অনুরোধ করব।’
‘এরপর কাঁচামালগুলো হাতে পেলে তৈরি করতে সময় লাগবে সাত থেকে ১০ দিন। তৈরি করার পর সেটা ওষুধ অধিদপ্তর দেখে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে। তাহলেই আমি এক মাসের মধ্যে তা জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারব।’
কর ফ্রি ও খালসের বিষয়ে গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা আরো বলেন, ‘আমি কাগজপত্র তৈরি করছি, সরকারের কাছে আবেদন করব যাতে আমাকে সুযোগ দেয়।’
এই কিটের মাধ্যমে একজন রোগী কত সময়ের মধ্যে ফলাফল জানতে পারবে- এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘১৫ মিনিটের মধ্যেই রোগ শনাক্ত করতে পারবে এই কিট।’
এ সময় প্রবাসীদের কথা উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘তাঁরা আমাদের দেশের রেমিট্যান্স-যোদ্ধা, তারা দেশে এসে ভোগান্তিতে থাকেন। এই কিট তৈরি হলে তাঁরা আর ভোগান্তিতে পরবেন না। স্বল্প সময়েই রোগ নির্ণয় হবে। আশা করছি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উৎপাদন শুরু করলে দেশে কিট নিয়ে কোনো সঙ্কট থাকবে না।’
গত মঙ্গলবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে এই কিট আবিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য-আরএনএ বায়োটেক লিমিটেডের একটি উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন একটি দল গত ফেব্রুয়ারি থেকে কিট তৈরি ও উৎপাদনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. বিজন কুমার শীল। বিজন কুমার গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান বিজ্ঞানী। তিনি ২০০৩ সালে সার্স পিওসি কিট তৈরি করা দলের সদস্য ছিলেন।
ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে আরো রয়েছেন গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক নিহাদ আদনান, মোহাম্মদ রাশেদ, জমির উদ্দিন ও ফিরোজ আহমেদ।
বিজন কুমার ও তাঁর দলের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে ৩৫০ টাকায় ১৫ মিনিটে করোনা শনাক্ত সম্ভব জানিয়ে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে মাত্র ৫ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে করোনা শনাক্ত করা যাবে। এতে খরচ পড়বে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা। সরকার যদি এর ওপর ট্যাক্স-ভ্যাট আরোপ না করে, তাহলে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র দুই থেকে আড়াইশ টাকায় এটি বাজারজাত করতে পারবে বলে দাবি করেছে।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশ তাদের প্রয়োজনে করোনা ভাইরাসের কিট তৈরি করলেও বাংলাদেশে এমন কাজ প্রথম করা হলো।
সারাদেশে আক্রান্ত সংখ্যা
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ভাষ্যমতে ‘বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ জন। আর প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৩ জন। এ ছাড়া সারাদেশে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।’