লিবিয়ায় হত্যার ১০ দিনেও সন্ধান নেই ভৈরবের দুই যুবকের

লিবিয়ায় মানবপাচারকারীদের হাতে ২৬ বাংলাদেশি হত্যার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও কিশোরগঞ্জের ভৈরবের দুই যুবকের কোনো সন্ধান মিলছে না। তারা মারা গেছেন, না জীবিত আছেন-কোনো খবর পাচ্ছেন না পরিবারের লোকজন। ফলে অনিশ্চিত শঙ্কায় স্বজনদের দিন কাটছে। করছেন বুকফাটা আহাজারি।
দুই যুবক হলেন শহরের জগন্নাথপুর এলাকার ফল ব্যবসায়ী আসাদ মিয়ার ছেলে বিজয় মিয়া ও একই গ্রামের মৃত আলী আকবরের ছেলে ইসার উদ্দিন। আসলে তারা বেঁচে আছেন, না মারা গেছেন- জানতে চান স্বজনরা। লিবিয়ায় নিহত ও আহতদের তালিকায় তাঁদের কারো নাম নেই।
নিখোঁজ হওয়া যুবকদের স্বজনরা জানান, ভৈরব পৌর শহরের জগন্নাথপুর গ্রামের দালাল জাফরের কথায় সংসারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে অবৈধ পথে লিবিয়ায় পাড়ি জমান একই গ্রামের ইসার উদ্দিন ও বিজয় মিয়া। জাফরের কথা মতো তারা প্রত্যেকে সাড়ে চার লাখ করে টাকা দিয়ে লিবিয়া যান। সবশেষ পরিবারের কাছে ২৫ মে একটি ভয়েস রেকর্ড পাঠান তাঁরা। রেকর্ডে তাঁরা দুজনেই আবারও ১০ লাখ টাকা করে পাঠাতে বলেন। অন্যথায় তাঁদের মেরে ফেলা হবে বলেও জানান।
সন্তানের এমন আকুতিতে টাকা জোগাড় করতে যখন স্বজনরা দিশেহারা, ঠিক তখনই অর্থাৎ এর তিন দিন পরই মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের গুলিতে ২৬ জন বাংলাদেশি নিহত হওয়ার খবর পান তাঁরা। এ ঘটনার পর থেকে ইসার উদ্দিন ও বিজয়ের কোনো খোঁজ মিলছে না।
ভৈরব উপজেলা প্রশাসনের হাতে ভৈরবের হতাহতদের নামের তালিকা এলেও সেই তালিকায় নিখোঁজ এই দুজনের নাম নেই। ফলে উৎকণ্ঠায় পড়েছেন ইসার উদ্দিন ও বিজয়ের স্বজনরা।
লিবিয়ায় থাকা আত্মীয় ও স্থানীয় পরিচিতজনদের কাছে যোগাযোগ করেও নিখোঁজ সন্তানের খোঁজ পাননি বলে জানালেন বিজয় মিয়ার বাবা আসাদ মিয়া ও মা পেয়ারা বেগম। যেকোনো কিছুর মূল্যে তাঁরা তাঁদের সন্তানের সন্ধান চান। ফিরে পেতে চান তাঁদের কাছে।
নিখোঁজ হওয়া দুজনের সঠিক তথ্য নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনাসহ দালালদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম ও দরবারী কামরুজ্জামান।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা জানান, তিনি নিখোঁজ দুই যুবকের সন্ধানে খবরা-খবর নিচ্ছেন। তিনি ইতোমধ্যে লিবিয়ার ত্রিপলিতে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেছেন।