মোবাইল নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করতে হবে : হাইকোর্ট

মোবাইল ফোনের দুর্বল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেটের ধীরগতি সমস্যার সমাধান করে মানসম্মত নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শুনানিতে রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান আদালতে নেটওয়ার্ক সমস্যার কথা তুলে ধরেন। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী বিটিআরসির লিখিত জবাবে নেটওয়ার্কের সমস্যা সমাধানে তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে আদালতকে অবহিত করেন।
বিটিআরসি বলেছে, নেটওয়ার্ক সমস্যা তারা প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
তখন শুনানিতে হাইকোর্ট বলেন, মোবাইল অপারেটরদের নেটওয়ার্কের সমস্যার সমাধান করতে হবে। প্রত্যন্ত এলাকায় নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। জনগণের টাকা যাচ্ছে। বিটিআরসি যেহেতু উদ্যোগ নিয়েছে তাই এ রিট মামলা দুই মাস স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রাখছি।
আদালত রিটকারীর আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, দুই মাসে নেটওয়ার্ক সমস্যার সমাধান না হলে কোর্টকে মেনশন করে জানাবেন। এই পিটিশনটি তখন শুনানির জন্য আবার আসব।
এর আগে গত ৮ জুন মোবাইল ফোনের দুর্বল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেটের ধীর গতি সমস্যার সমাধান করে গুণগতমান সম্মত নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে গ্রাহকদের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইন্টারনেটের গতি সেবা দিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
মোবাইল ফোনে গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সদস্য সাংবাদিক মেহেদী হাসান ডালিম এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. রাশিদুল হাসানের পক্ষে অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এ রিট দায়ের করেন।
রিটে তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান গ্রামীণফোনসহ মোবাইল কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, দুর্বল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেটের ধীর গতির কারণে মোবাইল ফোন গ্রাহকরা মারাত্মক ভোগান্তিতে আছেন। গ্রাহকের কাছ থেকে যে পরিমাণ খরচ নেওয়া হয় সে তুলনায় সেবার মান হতাশাজনক। মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেলেও মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো সে অনুযায়ী সেবা দেয়নি, যার ফলে গ্রাহকদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
২০২০ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, ডিজিটাল সেবার মান নিশ্চিতকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তালিকায় শেষের দিকে।
রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, দেশের ইন্টারনেট গতি এতটাই দুর্বল যে অনেক জায়গায় মানুষ ইন্টারনেটের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমাদের যে টাকা দিয়ে নেট কেনা হয় তার মেয়াদ শেষ হলে ব্যবহার করা যায় না। অথচ, নির্দিষ্ট সময়ে ব্যবহার করতে না পারার অন্যতম কারণ হলো ধীরগতি। তিনি বলেন, বছরে সাড়ে পাঁচ লাখ অভিযোগ জমা হয় বিটিআরসিতে, কিন্তু গ্রাহকেরা এখনো ভোগান্তির শিকার।
গত বছরের ২৭ নভেম্বর মোবাইল ফোনের দুর্বল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেটের ধীর গতি সমস্যার সমাধান করে গুণগতমান সম্মত নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশ পাওয়ার পরও মোবাইল ফোনের দুর্বল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেটের ধীর গতি সমস্যার সমাধান করে মানসম্মত নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা নিশ্চিতে ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ রিট দায়ের করা হয় বলে জানান আইনজীবী।