ভৈরব লকডাউন, ৬৪ পুলিশ সদস্য ও ৫ চিকিৎসক কোয়ারেন্টিনে

কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানার এক পুলিশ সদস্য (উপপরিদর্শক) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দুজন পরিদর্শকসহ তাঁর ৬৪ জন সহকর্মী পুলিশ সদস্য এবং পাঁচজন চিকিৎসকসহ ৬৯ জনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। জেলা পুলিশ লাইন থেকে ভৈরব থানায় যোগ দিয়ছেন ৩৫ পুলিশ সদস্য। তাঁদের মধ্যে চারজন উপপরিদর্শক এবং ৩১ জন কনস্টেবল।
এর পাশাপাশি ভৈরব উপজেলাকে আশপাশের অন্যান্য জেলা-উপজেলা থেকে করা হয়েছে লকডাউন (বন্ধ)। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠানো গণবিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি লুবনা ফারজানা ১৫ জন পুলিশ সদস্যকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো সিদ্ধান্ত জানালেও, পরে রাত ১০টার দিকে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ভৈরব থানার সব পুলিশ সদস্যকে (৬৪ জন) কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেন।
৬৪ জন পুলিশ সদস্যের মাঝে দুই পরিদর্শকসহ (ওসি) ৩১ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে (নিজ নিজ বাসায়) আর ৩৩ জনকে স্থানীয় শহীদ আইভি রহমান পৌর স্টেডিয়ামে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা লকডাউনের পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসারের (আরএমও) রুম, পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (চন্ডিবের) এলাকার মর্ডান হাসপাতাল, শহরের কমলপুর এলাকার মনি ব্যাচেলার্স (মেস) এর গলি, গলির মুখের দোকান, কেয়ার ফার্মেসি, উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের চক বাজার, আকবরনগর বাজার এবং শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর এলাকা সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
করোনার উপসর্গের কারণে ভৈরব থানার ওই পুলিশ (উপপরিদর্শক) সদস্যের নমুনা এরআগে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠালে গতকাল শুক্রবার দুপুরে আসা রিপোর্টে তাঁর করোনা শনাক্ত হয়। বিকেলে তাঁকে ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও চিকিৎসা বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি দীর্ঘ সভা শেষে এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। পরে বিজ্ঞপ্তি আকারে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সেটি পাঠানো হয়।
এদিকে করোনায় আক্রান্ত ওই পুলিশ সদস্যের সংস্পর্শে আসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসারসহ অপর চার চিকিৎসককেও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে বলে জানান উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ।