নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে ২০০ কয়েদিকে মুক্তির প্রস্তাব

নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ২০০ জন কয়েদিকে মুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন সাজা খাটাসহ ছোটখাটো অপরাধ ও অধিক বয়স্ক (অচলাবস্থায় রয়েছেন) কয়েদি যাঁরা রয়েছেন, মূলত তাঁদের নিয়েই এ তালিকা করা হয়েছে। জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।
সুভাষ কুমার ঘোষ জানান, কয়েদিদের চিহ্নিত করে মুক্তির প্রস্তাব কারা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
জেল সুপার আরো জানান, করোনাভাইরাসের কারণে সরকারের নেওয়া উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের কাছে একটি তালিকা চায়। সরকারের নির্দেশনার আলোকে ক্ষেত্র বিশেষে কয়েদিদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। ওই তালিকা থেকে বিবেচনা করে সরকারের মাধ্যমে যাদের মুক্তি দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হবে, তারাই মুক্তি পাবেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে ৩০০ জন ধারণক্ষমতার বিপরীতে বর্তমানে প্রায় এক হাজার ৮০০ জন কয়েদি রয়েছেন উল্লেখ করে জেল সুপার সুভাষ কুমার জানান, কয়েদিদের পর্যবেক্ষণ করার দায়িত্বে কারারক্ষী ও হাবিলদারসহ কর্মকর্তা রয়েছেন ১৫০ জন। করোনা ঝুঁকি এড়াতে কয়েদি ও বিভিন্ন মামলার আসামিদের সঙ্গে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সাক্ষাৎ করা অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। অতি প্রয়োজনে কারাবন্দিদের সঙ্গে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের যোগাযোগের জন্য জেলা কারাগারের ভেতরে ও কারাগারের বাইরে ১০টি টেলিফোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া কারাগারের ভেতরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, কারাগারে এক জায়গায় অনেক বন্দি থাকে এবং তাদের চলাফেরার সুযোগ থাকে না। তাই এ ধরনের জায়গায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটলে তা বিপজ্জনক হতে পারে। বর্তমানে দেশের ৬৮টি কারাগারে ধারণক্ষমতার অধিক বন্দি রয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের নির্দেশনা পেয়ে জামিনযোগ্য ধারায় সারা দেশের বন্দিদের মধ্যে তিন হাজারের বেশি কারাবন্দিদের মুক্তির প্রস্তাব দিয়ে তালিকা তৈরি করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। এ তালিকা প্রস্তাব আকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর প্রস্তাবটি আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে। সেখানে আপত্তি না থাকলে তা আদালতে পাঠানো হবে। এরপর আদালত এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।