নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণ : যেভাবে আগুনের সূত্রপাত

নারায়ণগঞ্জ শহরের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় একটি মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৪ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়েছে আরো অনেকে। এশার নামাজ চলার সময় গতকাল শুক্রবার রাতে পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে এ বিস্ফোরণ ঘটে।
তবে এ বিস্ফোরণ এসি নয়, গ্যাসলাইন থেকে ঘটেছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন। তিনি গতকাল শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গণমাধ্যমকে এ কথা জানান।
আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, ‘মসজিদের নিচ দিয়ে একটি গ্যাসের পাইপলাইন গেছে। এ পাইপের লিকেজ দিয়ে মসজিদের ভেতর গ্যাস জমা হয়। মসজিদে এসি চলার কারণে দরজা-জানালা সব বন্ধ রাখা হয়। আলো-বাতাস বের হতে পারে না। ফলে নির্গত গ্যাস বের হতে পারেনি। বিস্ফোরণের আগে বিদ্যুতের কোনো কিছু জ্বালানোর সময় স্পার্ক করে। আর সে স্পার্ক থেকে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।’

উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, মসজিদের মেঝেতে থাকা পানিতে গ্যাসের বুদবুদ ওঠায় সন্দেহ হয়। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, মসজিদের নিচ দিয়ে তিতাস গ্যাসের অনেকগুলো লাইন গেছে। আর পাইপগুলোর প্রতিটিতে একাধিক লিকেজ রয়েছে। সে লিকেজের গ্যাস সব সময় মসজিদে উঠত। নামাজের আগে থেকে মসজিদের দরজা-জানালা বন্ধ করে এসি চালু করার ফলে পুরো রুমে এসি ও গ্যাস মিশে যায়। আর তাতে করে ভয়াবহ এ বিস্ফোরণ ঘটে। এসি বিস্ফোরণ হওয়ার কারণ হলো এসিতে গ্যাস ছিল।
আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, ‘আমরা ধারণা করে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা দ্রুত এখানে এসে আমাদের ধারণাকে নিশ্চিত করে। তারাও জানায়, গ্যাসের লাইন থেকেই এই বিস্ফোরণ হয়েছে।’
ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, এশার নামাজ পড়ার সময় একই সঙ্গে মসজিদের ছয়টি এসি বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন লেগে যায়। এ সময় শতাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করছিলেন।
বিস্ফোরণে আহতদের প্রথমে শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহতদের ঢাকায় পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে নেওয়া হয়। দগ্ধদের মধ্যে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ইতোমধ্যে কয়েকজনের মরদেহ স্বজনদের কাছে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।