আমদানি করা গ্যাসের জন্য আরও তিনটি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলা। বর্তমানে দুটি এলএনজি টার্মিনাল চালু রয়েছে।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, ‘প্রস্তাবিত তিনটি নতুন এলএনজি টার্মিনাল পায়রা, মহেশখালী ও মাতারবাড়িতে স্থাপন করা হবে, যার মোট রিগ্যাসিফিকেশন ক্ষমতা হবে দুই হাজার থেকে তিন হাজার এমএমসিএফ/ডি।’

জনেন্দ্র বলেন, ‘তিনটি এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করা হবে, তার মধ্যে দুটি ভাসমান হবে—যা ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) নামে পরিচিত, আর একটি হবে ভূমিভিত্তিক টার্মিনাল।’

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, তিনটি এলএনজি টার্মিনালই দেশি-বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে প্রাপ্ত অফারগুলোর ভিত্তিতে স্থাপন করা হবে।

দু’টি ভাসমান স্টোরেজ এবং রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট ২০১৮ সাল থেকে চালু রয়েছে। এরমধ্যে একটি কক্সবাজারের মহেশখালীতে ইউএসএ’র এক্সেলরেট এনার্জি প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের এবং একই এলাকায় একই ক্ষমতার আরেকটি স্থাপন করেছিল সামিট গ্রুপ।

নতুন করে আরও তিনটি টার্মিনালের মধ্যে এক্সেলরেট এনার্জি পায়রা অঞ্চলের জন্য একটি অফার দিয়েছে এবং সামিট গ্রুপ মহেশখালীর জন্য একটি অফার দিয়েছে। পেট্রোবাংলা মাতারবাড়ি এলাকার জন্য ১২টি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাবদ্ধ করেছে।

পায়রা এবং মহেশখালীর প্রতিটি ইউনিটের ৫০০ থেকে এক হাজার এমএমসিএফ/ডি রিগ্যাসিফিকেশন করার ক্ষমতা থাকবে।

সম্প্রতি পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, ‘আলোচনা দ্রুত এগিয়ে চলছে। আমরা পায়রা ও মহেশখালী টার্মিনালের জন্য মেয়াদী চুক্তিপত্র প্রস্তুত করেছি এবং অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।’

পেট্রোবাংলা মাতারবাড়ি ভূমিভিত্তিক টার্মিনালের জন্য জমির আসল মালিক বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছ থেকে একটি অনাপত্তি সনদ পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

জনেন্দ্র বলেন, ‘আমরা একবার এনওসি পেয়ে গেলে আমাদের দল এবং পরামর্শদাতা মাতারবাড়ি টার্মিনালের জন্য ফার্ম নির্বাচন করতে প্রস্তুত।’  মাতারবাড়ি ভূমিভিত্তিক টার্মিনালের প্রাথমিক ক্ষমতা থেকে সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প থাকবে।

জেনেন্দ্র অবশ্য বলেন, ‘সরকার যদি এখন টার্মিনাল স্থাপনের অনুমোদন দেয়, তাহলে এগুলো স্থাপন ও অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হতে তিন থেকে পাঁচ বছর সময় লাগবে।’

নতুন এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের জন্য পেট্রোবাংলার পদক্ষেপের বিষয়ে জনেন্দ্র বলেন, ‘দেশে গ্যাস সরবরাহের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে এবং এটি ২০৩০ সালের মধ্যে ছয় হাজার ৫০০ এমএমসিএফ/ডি-তে পৌঁছাবে। এই পদক্ষেপ না নিলে দেশে গ্যাস সরবরাহে আরও ঘাটতি দেখা দেবে।’