যুক্তরাজ্যে ফিলিস্তিনপন্থি সমাবেশ থেকে ৯০০ বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রায় ৯০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্য দিয়ে কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যে কঠোর অবস্থান নিয়েছে, তা আবারও স্পষ্ট হয়েছে। খবর আলজাজিরার।
লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) ৮৯০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৫৭ জনকে নিষিদ্ধ ঘোষিত প্যালেস্টাইন অ্যাকশন নামের একটি গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন দেখানোর সন্দেহে আটক করা হয়েছে। বাকি ৩৩ জনকে পুলিশের ওপর হামলা ও জনশৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবারের বিক্ষোভের আয়োজক ডিফেন্ড আওয়ার জুরিস নামের একটি প্রচারণা গোষ্ঠী পুলিশের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে, পুলিশ সহিংসভাবে লোকজনকে গ্রেপ্তার করেছে ও মিথ্যা দাবি করে বিক্ষোভকারীদের কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে। তারা আরও দাবি করে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে যাজক, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও হলোকাস্ট থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষের বংশধরও ছিলেন।
প্রেস অ্যাসোসিয়েশন সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। এই সময় পুলিশের দিকে পানি ও প্লাস্টিকের বোতল ছোড়া হয়েছিল। একজন বিক্ষোভকারীর মুখ থেকে রক্ত ঝরছিল বলে সংবাদ সংস্থাটি উল্লেখ করে।
ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার ক্লেয়ার স্মার্ট বলেছেন, তার কর্মকর্তারা ‘সমন্বিত’ সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছিলেন।
প্যালেস্টাইন অ্যাকশন হলো একটি ফিলিস্তিনপন্থি গোষ্ঠী, যা ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত অস্ত্র কারখানাগুলোকে লক্ষ্য করে বিক্ষোভ করে থাকে। একটি সামরিক ঘাঁটিতে দুটি বিমানে লাল রঙ স্প্রে করার পর গত বছর এই সংগঠনটিকে যুক্তরাজ্য সরকার ২০০০ সালের সন্ত্রাসবাদ আইনের অধীনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বর্তমানে, এই গোষ্ঠীর সদস্য হওয়া বা তাদের সমর্থন জানানো ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, একটি রাজনৈতিক প্রতিবাদ আন্দোলনকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাদের মতে, যেসব প্রতিবাদে কেবল সম্পত্তির ক্ষতি হয়, কিন্তু মানুষ হত্যা বা আহত করার উদ্দেশ্য থাকে না, সেগুলোকে সন্ত্রাসবাদ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়।
গাজায় ইসরায়েলের হামলার তীব্রতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এই বিক্ষোভগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা অনেক বিশেষজ্ঞ ও অধিকার গোষ্ঠী ‘গণহত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করছেন।