ফোনে কথা বলেও সমাধান পাননি পাইলট, বিধ্বস্ত এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান

আলাস্কার রানওয়েতে বিধ্বস্ত হওয়ার আগে একটি মার্কিন এফ-৩৫ ফাইটার জেটের পাইলট প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কনফারেন্স কলে কথা বলছিলেন। কিন্তু শত চেষ্টা করেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাকে প্যারাসুট ব্যবহার করে বিমান থেকে বের হতে হয়। বিধ্বস্ত হয় এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানটি।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দুর্ঘটনার মূল কারণ ছিল বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার সংক্রান্ত একটি গুরুতর ত্রুটি। বিমানের সামনের ও প্রধান ল্যান্ডিং গিয়ারের হাইড্রোলিক লাইনে বরফ জমে গিয়েছিল। উড্ডয়নের পর পাইলট যখন ল্যান্ডিং গিয়ারটি ভিতরে নেওয়ার চেষ্টা করেন, তখন সেটি ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে যখন তিনি অবতরণের জন্য গিয়ারটি নামাতে যান, তখন সেটি বাম দিকে আটকে যায়।
পাইলট যখন এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছিলেন, তখন বিমানটি এমনভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছিল যেন এটি মাটিতে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি লকহিড মার্টিনের পাঁচজন ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে কনফারেন্স কলে যুক্ত থেকে সমস্যার সমাধান খুঁজছিলেন।
পাইলট দুবার ‘টাচ অ্যান্ড গো’ অবতরণের চেষ্টা করেন, কিন্তু দুটি চেষ্টাই ব্যর্থ হয়। এতে ল্যান্ডিং গিয়ারগুলো পুরোপুরি অকেজো হয়ে যায়। বিমানের সেন্সরগুলো ভুল সংকেত দিচ্ছিল, ফলে বিমানটি ‘অনিয়ন্ত্রণযোগ্য’ হয়ে পড়লে পাইলট বাধ্য হয়ে বের হয়ে আসেন।
মার্কিন বিমান বাহিনীর তদন্তে জানা যায়, বিমানের হাইড্রোলিক তরলের এক-তৃতীয়াংশে পানি ছিল, যা তাপমাত্রা -১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকায় বরফ হয়ে গিয়েছিল। নয় দিন পর একই ঘাঁটিতে একই রকম সমস্যা দেখা দিলেও সেই বিমানটি নিরাপদে অবতরণ করতে পেরেছিল।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাইলটের সিদ্ধান্তের পাশাপাশি ‘বিপজ্জনক প্রোগ্রামের জন্য অপর্যাপ্ত তদারকি’ এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।
উল্লেখ্য, লকহিড মার্টিনের এফ-৩৫ প্রোগ্রামটি নির্মাণে উচ্চ খরচের জন্য বরাবরই সমালোচিত। ২০৮৮ সাল পর্যন্ত চলমান এই প্রকল্পের মোট খরচ দুই ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।